Aajbikel

প্রাপ্ত নম্বর ১৭ বেড়ে হয়েছিল ৫২! বিয়ের পরের দিনই চাকরি গেল 'সরকারি চাকুরে' পাত্রের

 | 
প্রণব রায়

জলপাইগুড়ি: বাড়িতে তখন সাজো সাজো রব৷ বিয়ে বলে কথা৷ বৃহস্পতিবার ছিল বিয়ে, আর রবিবার বৌভাত। কিন্তু শুভ দিনে সানাই-এর সুর হল বিষাদ৷ একটা খবরেই সব লন্ডভন্ড৷ শুক্রবার বিকেলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাই কোর্ট৷ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাতিল হয়ে গেল গ্রুপ সি-র ৮৪২ জনের চাকরি৷ সেই তালিকায় নাম ছিল প্রণব রায়েরও। এক লহমায় আনন্দ বদলে গেল চিন্তায়৷ যেন বাজ ভেঙে পড়ল প্রণবের পরিবারের মাথায়৷ 

আরও পড়ুন- দুটি ফোন যেন 'সোনার খনি', শান্তনুকে নিয়ে আর কী বলল ইডি

জলপাগুড়ির ক্রান্তি ব্লকের চেংমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা প্রণব। ২০১৭ সালে রাজডাঙা কেন্দা মহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লার্কের চাকরিতে যোগ দেন তিনি। দিন কয়েক আগেই বিয়ে ঠিক হয় তাঁর। বিয়ে উপলক্ষে ৬ মার্চ থেকে ছুটিও নিয়ে নেন তিনি। বিয়ের পর্ব কাটিয়ে স্কুলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ১৫ মার্চ৷ কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশের পর সবটাই ওলটপালট হয়ে গেল৷ 

শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, গ্রুপ সি পদে ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ রয়েছে এমন ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। সেই নির্দেশ মেনেই ‘অবৈধ’ কর্মীদের তালিকাও প্রকাশ করে দেয় কমিশন। সেই তালিকায় ৪৫১ নম্বরে রয়েছে প্রণবের নাম।


বিয়ের ঠিক পরের দিনই চাকরি হারানোর খবর পান তিনি। একরাশ মন খারাপ নিয়েই বিয়ের বাকি নিয়ম সারেন প্রণব। শনিবার জানতে পারেন পর্ষদ ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করে দিয়েছে৷ এই সংবাদের পর রবিবার প্রণবের বাড়িতে বৌভাতের অনুষ্ঠান ছিল একেবারেই জৌলুসহীন। সোমবারও  থমথমে বাড়িঘর। তাঁদের বিয়ের ছবি এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।  কেউ লিখেছেন, 'বৃহস্পতিবার বিয়ে, শুক্রবার গেল চাকরি, শনিবার বউভাত'। কেউ আবার লিখেছেন, “ফুলশয্যা নয় কন্টকশয্যা হবে।” কেউ লিখেছেন, 'আদৌ ফুলশয্যা হবে তো'?  এক নেটিজেনের আবার টিপ্পনি, “সরকারি চাকুরে পাত্রেরও আজকাল কোনও গ্যারান্টি নেই। আগে দেখে নেবেন ঘুষ দিয়েছে কিনা।”


যদিও প্রণব এখনও বুঝতে পারছেন না, সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পরেও কেন এমনটা হল। তবে সোমবার এসএসসি-র তরফ থেকে যে নম্বর বিভাজিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ওএমআর শিটে প্রণবের প্রাপ্ত নম্বর মাত্র ১৭ নম্বর। কিন্তু সেটাই বেড়ে হয়েছে ৫২।


রাজডাঙা স্কুলের টিচার-ইন চার্জ সুদীপ দত্তের কথায়, ২০১৭ সালে তাঁদের স্কুলে যোগদান করেন প্রণব। ভাল কাজও করছিলেন। কিন্তু এমন খবরে স্কুলের সকলেই হতবাক। তবে এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনও মেল বা চিঠি স্কুলে আসেনি বলেও জানান তিনি।


 

Around The Web

Trending News

You May like