কলকাতা: আজ থেকে ঠিক ন’বছর আগের ঘটনা৷ একটি ছবি৷ একটা ক্যাপশন৷ আলোড়ন ফেলেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ গরম হয়ে উঠেছিল রাজনীতির হাওয়া৷ পোস্টটি করেছিলেন আজকের তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ৷ তখন অবশ্য তিনি কেবলই অভিনেত্রী৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় করা তাঁর সেই পোস্ট রাতারাতি বিতর্কের শিরোনামে এনে ফেলেছিল যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সায়নী ঘোষকে৷
২০১৫ সালে এক্স হ্যান্ডেলে একটি ছবি শেয়ার করেছিলেন সায়নী৷ যেখানে দেখা যায় একটি শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরাচ্ছেন এক মহিলা৷ গ্রাফিক দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল এই মহিলা এডস সচেতনতার বিজ্ঞাপনের ম্যাসকট ‘বুলাদি’৷ গ্রাফিকের ভিতরে লেখা ছিল, ‘বুলাদির শিবরাত্রি’। এই ঘটনাটি কেন্দ্র করে চড়েছিল রাজনীতির পারদ৷ তবে সময় বদলেছে৷ অভিনেত্রী থেকে নেত্রী হয়ে উঠেছেন সায়নী৷ তবে আজও তাঁর পিছু ছাড়েনি ‘কন্ডোম’ বিতর্ক৷
তৃণমূল তাঁকে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে টিকিট দেওয়ার পর ভোটের প্রচার শুরু করেছিলেন শিবের মাথায় দুধ ঢেলে৷ যে দেবতাকে বিঁধে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন, ভোটের সকালে ঘুরে ফিরে তাঁরই শরণাপন্ন হলেন৷ রীতি মতো কাঁসর-ঘণ্টা বাজিয়ে, ধুপ-ধুনো জ্বালিয়ে, শিবলিঙ্গের সামনে মাথা ঠুকে পুজো করলেন যুবনেত্রী৷ শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরানো সায়নী শিবেরই আশীর্বাদ পেতে ঢাললেন ঘটি ভরা দুধ৷ কারণ, ভোট বড় বালাই৷ এখানেই থামেননি তিনি৷ রীতিমতো মোমবাতির আলোয় আরতি সেরে ফুল-বেলপাতা চড়ালেন ঈশ্বরের পায়ে৷ সায়নী যখন পুজোয় ব্যস্ত তখন পিছনে দাঁড়িয়ে কাঁসর-ঘণ্টা বাজালেন তাঁর সাগরেদরা৷ দিলেন উলু ধ্বনি৷ কিন্তু, এত কিছুর পরেও কন্ডোম বিতর্ক পিছু ছাড়ল কি তাঁর? প্রশ্ন রয়েই গেল৷
মন্দরি থেকে বেরিয়েই এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী৷ তৃণমূলের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সুর তাঁর গলায়৷ এদিকে, শনিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত ভাঙড়। ভোটের শুরুতেই বুথে এজেন্ট বসানো নিয়ে গন্ডোগোল বাধে। শুরু হয় আইএস ও তৃণমূলের খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়েছে৷ ঝরেছে রক্ত৷ এই ঘটনায় দু’পক্ষেরই বেশ কয়েজন আহত হন। মাথা ফেটে গিয়েছে বেশ কয়েকজনের। এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী বলেন, ‘‘যারা বুঝতে পারছে জেতার কোনও সুযোগ নেই, তারাই অশান্তি করতে বাধ্য হচ্ছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে৷ আমি অনুরোধ করব, যাঁরা ওখানে দাঁড়িয়ে দাঙ্গাবাজি করছে, তাঁরা বড় বড় লিডার৷ তাই তাঁরা যেন লিডারের মতোই আচরণ করেন৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা চাই মানুষ আরও বেশি করে বেরিয়ে এসে ভোট দিক। কারণ মানুষ তৃণমূলের সমর্থনে ভোট দেবেন এটা নিশ্চিত। আমি অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনুরোধ করব, আপনারা অশান্তি করবেন না। মানুষকে শান্তিতে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে দিন।”