jadavpur hostel
নিজস্ব প্রতিনিধি: একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল থেকে। যা দেখে সবার চক্ষু চড়কগাছ হতে বাধ্য। আর মজার কথা হচ্ছে যে ঘটনাই সামনে আসছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে দেখা যাচ্ছে। কেউই নাকি কিছু জানতেন না! অথচ পুলিশের জেরায় সব তথ্যই সামনে গল গল করে বেরিয়ে আসছে। এই পরিস্থিতিতে জানা গেল মেন হস্টেলের টবে গাঁজার চাষ করা হতো। যাদবপুরের হস্টেল নিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাশাপাশি হস্টেলেও যে দেদার মাদক সেবন চলত তা আগেই জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে বাইরে থেকে নিয়মিত গাঁজা নিয়ে আসার পাশাপাশি হস্টেলের বারান্দার টবে আবাসিকদের একাংশ গাঁজার চাষ করতেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সেক্ষেত্রে বাইরে থেকে রোজ গাঁজা আনার প্রয়োজন হতো না। তবে বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর পর সেই টবগুলি বারান্দা থেকে দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এক ছাত্রের মোবাইল ফোন থেকে মুছে ফেলা তথ্য পুনরুদ্ধার করে এই বিষয়টি জানতে পেরেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় যে সমস্ত অভিযুক্ত ধরা পড়েছেন তাঁদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল যার নাম হল ‘জেইউএমএইচ’। যার পুরোটা হল, যাদবপুর ইউনিভার্সিটি মেন হস্টেল। সেই গ্রুপে বিভিন্ন ছবি ও মেসেজ আদান প্রদান করতেন পড়ুয়াদের পাশাপাশি প্রাক্তনীরাও। কিন্তু ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পরই ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সমস্ত মেসেজ মুছে ফেলা হয়। যদিও ধৃতদের মোবাইল ফোন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়ে যে তথ্য পুনরুদ্ধার করা হয়েছে তা থেকে জানা গিয়েছে হস্টেলের টবে গাঁজার চাষ হতো। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরী-সহ একাধিক প্রাক্তনী টবগুলি বারান্দা থেকে সরিয়ে ফেলে গাঁজা গাছগুলি নষ্ট করে ফেলতে বলেছিলেন। তাই পুলিশ হস্টেলে তল্লাশি চালিয়ে টব বা গাঁজার গাছ পায়নি। তবু সেগুলির সন্ধানে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এটা শিক্ষাঙ্গন, নাকি নেশার আঁতুরঘর? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও হস্টেলকে ঘিরে একের পর এক যে সমস্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তাতে আগামী দিনে অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের সেখানে পাঠানোর ভরসা পাবেন তো? মেন হস্টেলে দিনের পর দিন এত অনিয়ম হয়েছে, তবুও এর বিরুদ্ধে সামান্যতম ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, কেন প্রতিবাদ পর্যন্ত করেননি হস্টেল সুপার তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে হস্টেলে অনিয়মটাই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছিল। তাই দিনের পর দিন যথেষ্ট বেলেল্লাপনা চলেছে সেখানে। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলে কোনও কিছুই সামনে আসত না। পাঁচতারার তকমা যুক্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমস্ত ঘটনা যে তার গরিমা নষ্ট করছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই পরিস্থিতিতে গরিমা ধরে রাখার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও হস্টেলে সুপরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে কর্তৃপক্ষ কি পদক্ষেপ করেন সেটাই দেখার।