চেন্নাই: দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের নাম শুনলেই জিভে জল চলে আসে অনেকেরই। বাঙালি খাদ্যরসিক জাতি। চাইনিজ থেকে শুরু করে ইটালিয়ান, থাই, এমনকি উত্তর ভারতের মশলাদার মোগলাই, কোনোটাই বাদ যায় না বাঙালির খাদ্য তালিকা থেকে। দেশ বিদেশের বিভিন্ন খাবারে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া মিশিয়ে জমে ওঠে বাঙালির পেটপুজো। অন্যান্য খাবারের মতো দক্ষিণ ভারতীয় খাবারও কিন্তু রয়েছে বাঙালির পছন্দের তালিকার প্রথম সারিতেই।
এহেন খাদ্যরসিক বাঙালির সেই বিচিত্র স্বাদের বাহারকে আরো একবার চেখে দেখার সুযোগ এনে দিয়েছে ‘আইটিসি রয়াল বেঙ্গল’ (ITC Royal Bengal)। কলকাতায় দক্ষিণ ভারতীয় সেরা খাদ্যের সম্ভার নিয়ে রমরমিয়ে চলছে ‘নর্দান সার্কার্স'( Northern Circars)। ‘কিচেনস অফ ইন্ডিয়ার’ (Kitchens of India) পৃষ্ঠপোষকতায় আইটিসি রয়াল বেঙ্গলের গ্র্যান্ড মার্কেট প্যাভিলিয়নে গত ৮ জানুয়ারি শুরু হয়েছে এই অনুষ্ঠান। চলবে আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
কী এই নর্দান সার্কার্স? নামে উত্তর থাকলেও বিষয়টি কিন্তু আসলে দক্ষিণী। ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির প্রাক্তন এক বিভাগের নাম ছিল নর্দান সার্কার্স। বঙ্গোপসাগরের পশ্চিমে একটি ছোটো জনপদ নিয়ে গড়ে উঠেছিল এই নর্দান সার্কার্স। অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওডিশার বেশ কিছু অংশ নিয়ে স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত হিসেবে শাসন করা হত এই নর্দান সার্কার্স। স্বাধীনতার পরে তা মাদ্রাজ রাজ্যে পরিণত হয়। বিচিত্র স্বাদের খাবারের জন্য এই এলাকা বরাবরই জনপ্রিয় ছিল। বিশেষত খাবারের পদে নানা ভাবে লঙ্কার ব্যবহার এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।
এই এলাকার নানা জায়গায় উৎপন্ন হয় নানা ধরণের লঙ্কা। সে লঙ্কা দিয়ে তৈরি খাবারের স্বাদও হয় বিচিত্র। তরকারির জন্য মঙ্গলগিরি লঙ্কা, থক্কুস বা চাটনির জন্য মিরাপাকাই লঙ্কা প্রভৃতির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নর্দান সার্কার্স এলাকার সেই বিচিত্র স্বাদের খাবার দিয়েই কিছুদিনের জন্য সাজানো হয়েছে আইটিসি রয়াল বেঙ্গলের প্রাঙ্গণ।
আইটিসি হোটেলগুলির দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের প্রধান এবং জনপ্রিয় শেফ প্রবীণ আনন্দ আইটিসি রয়াল বেঙ্গলের এই নর্দান সার্কার্সের পরিচালনায় রয়েছেন। তাঁর জীবনের অন্যতম লক্ষ্যই হল দক্ষিণ ভারতের হারিয়ে যাওয়া খাবার গুলিকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা।পেসারা পুনুকুলু, কর্জাম ভেপুদু, বাংলা ডুম্পা , মশালা কুরা প্রভৃতি নানান সুস্বাদু মুখরোচক দক্ষিণী খাবার রয়েছে নর্দান সার্কার্সের আসরে। খাবারের স্বাদ একবার পেলে মুখে লেগে থাকবে বহুদিন।