কলকাতা: করোনা আবহে নবান্ন থেকে ইনফোকম ২০২০-র উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বঙ্গে শিল্পপতিদের স্বাগত জানিয়ে বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করলেন তিনি৷ এই বিনিয়োগের হাত ধরে রাজ্যে কর্মসংস্থানের পথ খুলতে চলেছে বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন- স্বাস্থ্যসাথীতে কাটা হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের মেডিকেল অ্যালাউন্স! উঠে গেল প্রশ্ন
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কোভিড বহু মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে৷ বহু মানুষ কর্মহীন৷ বিশ্ব অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে৷ একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের অর্থনীতিও৷ এই পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র শিল্প এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রগুলির উপর আমরা নির্ভর করতে পারি৷ এই সকল ক্ষেত্রগুলিতে উৎপাদন থেকে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব৷ তবে তিনি জানান, তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা একটি বড় ক্ষেত্র৷ রাজ্যে সিলিকন ভ্যাবিতে ২০টি সংস্থা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে৷ যাতে সম্মতি জানিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ তিনি আরও বলেন, ক্রমাগত প্রচেষ্টার ফলে বাংলা বৃহত্তম ই-গভর্ন্যান্স সেক্টর হিসাবে গড়ে উঠছে৷ প্রায় প্রতিটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার ঘর হয় উঠেছে বাংলা৷ ১ হাজার ৫০০টি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা বংলায় কাজ করছে৷ টিসিএস, উইপ্রো, ইনফোসিস, কগনিজেন্ট, আইবিএম, ইরেকশন, ক্যাপজেমিনি, টেক মহিন্দ্রার মতো প্রথম সারির প্রায় সমস্ত তথ্য প্রযুক্ত সংস্থা এখানে কাজ করছে৷ যেখানে ২ লক্ষ ১০ হাজারেরও বেশি ছেলেমেয়ে কাজ করছে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালিতে ১০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে৷ টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস নতুন ক্যাম্পাস হচ্ছে এখানে৷ প্রচুর লগ্নি আসছে৷ উইপ্রো ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে৷ এখানে অতিরিক্ত ১০ হাজার চাকরি হবে৷ ইতিমধ্যেই ৯ হাজার কর্মী রয়েছে উইপ্রোর৷ ফলে বেকার যুবকযুবতীদের কাছে কর্মসংস্থানের বিশাল সুযোগ থাকছে৷
আরও পড়ুন- ‘আমি বাংলার ছেলে, বাংলার জন্য লড়াই হবে’! তেরঙা হাতে বার্তা শুভেন্দুর!
তিনি জানান, বর্তমানে ভারতের বৃহত্তম তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখায় ৪৪ হাজার কর্মী রয়েছে৷ আগামী দিনে তা বেড়ে ৬১ হাজার হতে চলেছে৷ যা বেঙ্গালুরু শাখাকেও ছাপিয়ে যাবে৷ বাংলায় কগনিজেন্টের ১৬ হাজার তথ্য প্রযুক্তি কর্মী রয়েছে৷ তাঁদেরও কর্মী সংখ্যা বাড়ানো হবে৷ নিউ টাউনে আইটিসি ইনফোটেকের প্রকল্প প্রায় শেষ হয়ে এসেছে৷ সেখানে কমপক্ষে ৩ হাজার আইটি কর্মী নিয়োগ করা হবে৷ ইনফোসিসও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে জমি নিয়েছে৷ সেখানে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা গড়ে তোলা হবে৷ জুলাই শুরু হবে প্রকল্পের কাজ৷
এছাড়াও কলকাতায় এইচএসবিসি ব্যাঙ্ক ব্যাক অফিসে ৩ হাজার আইটি কর্মী নিয়োগ করবে৷ শুধু শহর নয়, গ্রামাঞ্চলে ১৮টি আইটি পার্ক গড়ে তোলা হবে৷ ১৫০টি স্টার্টআপ ইতিমধ্যেই উদ্বোধন করা হয়েছে৷ যেখানে বিপুল সংখ্যাক কর্মসংস্থান তৈরি হবে৷ জাপানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এমএসএমই ক্ষেত্রে কাজ হচ্ছে৷ এখানে ৯০ লক্ষ ইউনিট রয়েছে৷ ১ কোটি ৩৬ লক্ষ কর্মী সেখানে যুক্ত রয়েছে৷ ৬৫টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে৷ তৈরি হয়েছে অ্যানিমেশন অ্যাকাডেমি৷ এখানে ‘কর্মভূমি’ চালু করা হেয়েছে৷ যার মাধ্যমে বহু মানুষ চাকরি পেয়েছেন৷
আরও পড়ুন- মানুষের জন্য আমার প্রাণ গেলেও কিছু আসে যায় না! টিকা নিয়ে ফিরহাদ
রাজ্যে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ এখন বিশ্বে পরিচিতি পাচ্ছে। বাংলার শিল্প যা পারে, অন্যরা তা পারে না। তবে নাম করেই কেন্দ্রকে বিঁধে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন আবিষ্কার ছাড়াও পরিস্থিতি মোকাবিলায় নির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন৷ কোনটা প্রয়োজন সেটা বুঝতে হবে৷ ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়৷ সেই সঙ্গে বাংলায় জিডিপি-র হার সবচেয়ে বেশি বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷