রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাঝে পড়েই প্রাণ গেল যাদবপুরের পড়ুয়ার? উঠছে প্রশ্ন

রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাঝে পড়েই প্রাণ গেল যাদবপুরের পড়ুয়ার? উঠছে প্রশ্ন

7ca32ce63a8df9a5db1ef8085df4871f

কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে মোট ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক তথ্য সামনে এলেও পুলিশ এখনও বহু জিনিস নিয়ে ধন্দে আছে। তারা জানিয়েছে, ধৃতরা সবাই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করার চেষ্টা করছে, এমনকি একে অপরের দিকে দোষের আঙুল তুলছে। এর আগে যে চিঠি উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে তা নিয়েও পুলিশের অনুমান ছিল, অন্য কাউকে ফাঁসাতে চেয়েই এই চিঠি লেখা। তাই বিশেষজ্ঞ মহলে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে যে, আদতে এই ছাত্র রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাঝে পড়েই প্রাণ খোয়ালো কিনা। 

হস্টেল থেকে উদ্ধার হওয়া প্রথম ডায়েরিতে যে চিঠি মিলেছিল তা বাংলা বিভাগের এক ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে ডিনকে লেখা। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে একজন সেই চিঠি লেখে এবং তাতে জোর করে মৃত ওই পড়ুয়ার সই নেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, বাংলা বিভাগে অন্য রাজনৈতিক সংগঠনের প্রভাব থাকায় সেই প্রভাব নষ্ট করতে বদ্ধপরিকর ছিল ধৃতদের অনেকেই। তাই ছক করেই ওই চিঠি লেখা হয়েছিল বলে আন্দাজ করতে পারছেন পুলিশ আধিকারিকরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন ওই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে ডিনকে চিঠি লেখার জন্য মৃত ছাত্রকে চাপ দিতে শুরু করেছিল অভিযুক্তরা। সে চিঠি লিখতে রাজি না হলে, পরে এক ধৃত সেই চিঠি লেখে এবং নীচে ওই ছাত্রের নামে সই করা হয় জোর করে। 

এই ঘটনায় যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের মধ্যে আছে প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী। এছাড়া আছে বর্তমান পড়ুয়া মনোতোষ ঘোষ ও দীপশেখর দত্ত। পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ আসিফ, মহম্মদ আরিফ, অঙ্কন সরকার, অসিত সরদার, সুমন নস্কর ও সপ্তক কামিল্যাকে। ওই রাতের রহস্য উদঘাটনে শুক্রবার যাদবপুরকাণ্ডে গ্রেফতার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সপ্তক কামিল্যাকে নিয়ে আসা হয় যাদবপুর মেন হস্টেলে। পুলিশ সূত্রে খবর, সপ্তককে নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই হস্টেলে ৯ অগস্ট রাতের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। 

গত ৯ অগাস্ট রাতে ঠিক কী হয়েছিল? ঘটনার মুহূর্তে কে কোথায় ছিল? কোন ঘরে নেওয়া হয়েছিল ওই ছাত্রের ইন্ট্রো? সেই সময় কে কে ওই ঘরে ছিল? কোন ঘরে এনে তাঁর পোশাক খোলা হয়েছিল? এই সব প্রশ্নের জবাব খুঁজছে পুলিশ। যদি সত্যি এই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক কোনও কারণ থেকে থাকে তাহলে তার দায়ভার কার, সেটাও একটা আলাদা প্রশ্ন। এমনিতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক নিয়ম নীতি নিয়ে তো প্রশ্ন উঠেছেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও এখন হাজারো প্রশ্নচিহ্ন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *