সিউড়ি: এবার রুপশ্রী প্রকল্পে জালিয়াতির অভিযোগ উঠল মুখ্যমন্ত্রীর প্রিয় কেষ্ট ওরফে অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুক বীরভূমে৷ জেলার নলহাটি ব্লকের নওয়াপাড়া এবং তিলোরার গ্রামের মোট আট জনের বিরুদ্ধে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিডিও অফিসের মেলবন্ধন ঘটানোর কাজে মিডিয়েটর হিসেবে নাম উঠে এসেছে স্থানীয় যুবক আবেল শেখের৷
বিডিও তৎপরতায় সামনে এসেছে বিষয়টি৷ তারপরই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন৷ নজিরবিহীনভাবে সরকারি প্রকল্পে জালিয়াতি করে টাকা হাতানোর অভিযোগে শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত৷ বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘তদন্তে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷’’ আরও একধাপ এগিয়ে নলহাটি ২ ব্লকের বিডিও হুমায়ুন চৌধুরী বলেন, ‘‘এটা বড় ব্যাপার। সরকারি প্রকল্পের অর্থ এভাবে তছরূপ হতে দেব না৷ পুলিশ তদন্ত করছে৷ দেখা যাক, আরও অনেক কিছু জানা যাবে।’’
নলহাটি ব্লকে রূপশ্রী প্রকল্পের প্রাপকদের অর্থ বিলির ক্ষেত্রে জালিয়াতি করা হয়েছে-এই অভিযোগ আসার পর নড়েচড়ে বসেন বিডিও৷ খোঁজ নিয়ে দেখেন, দুটি গ্রামের আটজনের নাম রয়েছে রূপশ্রী প্রকল্পে৷ কিন্তু তাঁরা কেউই ২৫ হাজার টাকা করে পাননি৷ তাঁদের প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে অর্ধেক অর্থাৎ সাড়ে ১২ হাজার টাকা করে৷ প্রাপকেরা হলেন- মোমেনা খাতুন, রুবেনা খাতুন, হাসেনা খাতুন, লাসুনিয়া খাতুন, মুরসিদা খাতুন, গৌরি মাল, আশা মাল এবং সমাপ্তি দাস। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যাঁরা রূপশ্রী প্রকল্পে টাকা পেয়েছেন, তাঁদের কারও কারও বিয়েও হয়ে গিয়েছে আগেই৷ তাহলে টাকা পেলেন কি করে?
ঘটনার যাবতীয় দায় বিডিও অফিসের ঘাড়ে চাপিয়েছেন নওয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহম্মদ ইমদাদুল হক৷ তিনি বলেন, ‘‘রূপশ্রী প্রকল্প বিডিও অফিস থেকে করা হয়৷ আমরা এবিষয়ে কিছু জানি না৷’’ একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার পর, বিডিও কেন হঠাৎ এই দুই গ্রামে তদন্ত করতে নামলেন? আগে কেন তদন্ত হয়নি?’’ অভিযুক্ত আবেল শেখের অবশ্য প্রতিক্রিয়া মেলেনি৷ তবে বিডিও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন’৷
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘ওই বিডিও সঠিক জায়গাতেই ধরেছেন৷ পরিস্থিতি যে দিকে মোড় নিচ্ছে তাতে আরও কি কি তথ্য সামনে আসে দেখা যাক৷’’ অনুব্রতর খাসতালুকে সরকারি প্রকল্পের অর্থ তছরূপকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে শোরগোল৷