কলকাতা: বাংলায় কীভাবে চলছে লকডাউন বিধি? খতিয়ে দেখতে বাংলা এসেছে কেন্দ্রের বিশেষ পর্যবেক্ষক দল৷ রাজ্য সরকার কেন্দ্রের বিশেষ পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না৷ চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র যুগ্ম সচিব পুণ্য সলিলা শ্রীবাস্তব৷ এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র যুগ্ম সচিবের দাবি পত্রপাঠ খারিজ করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা৷ কেন্দ্রের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব জানিয়ে, বাইরে থেকে কেউ এসে আমাদেরকে বলে যাবে, কীভাবে করতে হয়?
আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘লকডাউন বিধি মেনে চলছে রাজ্য সরকার৷ ২৪ হাজার লোককে লকডাউন ভঙ্গের আভিযোগে আটক করা হয়েছে৷ আমরা ৩ হাজার গাড়ি আটক করেছি৷ ৩৩ হাজারের বেশি এফআইআর করেছি যারা বিধি ভাঙছেন৷ এই মুহূর্তে ১০টি জেলা অরেঞ্জ জনে আছে৷ ন’টা জেলা গ্রিন জনে আছে৷ আমরা আপনাকে নিশ্চিত করে বলছি, লকডাউন বিধি যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে৷’’
কেন্দ্রীয় দল প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘অপূর্ব চন্দ্র আমার সঙ্গে মিটিং করে গেছেন৷ আজ আমি আবার ওঁদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ তারপর ওঁরা বললেন, আমরা এলাকায় ঘুরতে চাই৷ আমরা বললাম, ঠিক আছে, আমরা লোকাল অফিসার দিয়ে দিচ্ছি৷ আপনারা যেখানে খুশি সেখানে ঘুরতে পারেন৷ আমাদের সরকারের অবস্থান, কেন্দ্র সরকার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই টিম পাঠালে ভালো হতো৷ আপনারা জানেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, এটা আমাদের মেনে নিতে পারছি না৷ এটা সত্য, আমি দুবার ওদের সঙ্গে বৈঠক করেছি৷ আমরা ওদের ডাকিনি৷ ওরা নিজেই এসেছে৷ নিজের ইচ্ছায় চলে যাবেন৷ কবে চলে যাবে ওঁরা আমাদেরকে এখনও জানায়নি৷ এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত উচিত নয়৷ রাজ্য সরকারকে দোষ দেওয়া ঠিক হচ্ছে না৷ পরিকাঠামো অনুযায়ী, কেন্দ্রের কোনও প্রতিনিধি দলকে রাজ্যের মুখ্য সচিবের সঙ্গে দেখা করতে হয়৷ ওরা যদি মুখ্যসচিবের সঙ্গে কোন অনুরোধ জানান, আমরা পরবর্তী ক্ষেত্রে সেটা ভেবে দেখব৷’’ এরপর মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আমরা ওদের সঙ্গে সহযোগিতা করছি৷ সবাই কর্নার বিরুদ্ধে লড়াই করছি৷ তবে, বাইরে থেকে কোন দল এসে আমাদেরকে বোঝাবেন, কীভাবে আমরা লকডাউন পালন করব, সেটা তো আর হবে না৷ আমরা আমাদের মতো করে সমস্ত বিধি কার্যকর করছি৷
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র যুগ্ম সচিব পুণ্য সলিলা শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকার ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী এন্টার মিনিস্টারিয়াল সেন্ট্রাল টিমকে ৪ রাজ্যে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে৷ এই দলকে রাজ্য সরকার পুরোপুরি সহযোগিতা করেছে৷ কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানতে পেরেছে, পশ্চিমবঙ্গে যে দলটি গিয়েছে কলকাতা ও জলপাইগুড়িতে৷ ওঁদের সঙ্গে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন কোনরকম সহযোগীতা করছে না৷ মিলছে না পরিদর্শনে যাওয়ার সুযোগ৷ তাঁদের যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে৷ স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না৷ ওদের সরোজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না৷ রাজ্য সরকার ২০০৫ সালে জারি করা কেন্দ্র সরকারের আদেশ লঙ্ঘন করচ্ছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আজ রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছে, তারা যেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ১৯ এপ্রিল ২০২০ জারি করা নির্দেশ পালন করেন৷ সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত যাতে করা যায়, তা ঠিকঠাক ভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে৷’’