দীর্ঘ প্রতিশ্রুতির বদলে মিলেছে বঞ্চনা, নরক যন্ত্রণায় ভুগছে নহাটা

দীর্ঘ প্রতিশ্রুতির বদলে মিলেছে বঞ্চনা, নরক যন্ত্রণায় ভুগছে নহাটা

নহাটা:  দীর্ঘ প্রতিশ্রুতির পর মিলেছে দীর্ঘ বঞ্চনা৷ তবে এবার আর প্রতিশ্রুতি চাই না। গোপালনগর নহাটা পার্বতী খালের সংস্কার চাই। এই দাবিতে সোচ্চার হলেন খালের দু’পাড়ের বাসিন্দারা৷ নহাটা বাজার সংলগ্ন বাঁশের সাঁকো বেহাল৷ এর বদলে কংক্রিটের সেতুর দাবি তুলেছেন তাঁরা৷ 

আরও পড়ুন-  কলকাতার ভোটার হলেন মহাগুরু, তবে কি নীল বাড়ি দখলে বিজেপি’র মুখ মিঠুন?

একালার প্রবীণ বাসিন্দা আরতি মণ্ডলের স্পষ্ট কথা, ‘‘ভোট এলে আমরা ভোট দেব ঠিকই৷ কিন্তু আমাদের ব্রিজ চাই, রাস্তা চাই৷ সোনা মা, সোনা ভাই বলে কোনও দিন রাস্তা হবে না৷’’ এখানকার মানুষের দাবি, ‘‘এই পার্বতী খাল বুজিয়ে দেওয়া যাবে না৷ অবিলম্বে পার্বতী খালের সংস্কার করতে হবে৷ সেতু তৈরি করতে হবে৷’’ নাহাটার অপর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এখানে যাঁরাই আসুক আমাদের কাজ আগে৷ তার পর তাঁদের সঙ্গে কথা হবে৷ কাজ না হলে নেতাদের সঙ্গে কোনও কথা বলবে না এলাকার কোনও মানুষ৷’’ স্থানীয় বাসিন্দা জ্যোৎস্না সরকার ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘‘আবার ভোট এসেছে৷ এবার তো কোনও পার্টির লোককেই পাড়াতে ঢুকতে দেব না৷ প্রয়োজনে ভোট নষ্ট করব৷ কিন্তু কাউকে ভোট দেব না৷’’ সুশীল শিকদার নাম অপর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এখানে বহু আন্দোলন হয়েছে৷ সব দলের রাজনৈতিক নেতারা এখানে এসেছেন৷ জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে সকলকে বলা হয়েছে৷ কিন্তু কোনও কাজ হয়নি৷ শুধু ভোট এলেই প্রতিশ্রুতি মেলে৷ ভোটে জেতানোর পরে আর কাজ হয়না৷’’ 

ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিলেও, ভোট চলে গেলে আর ফিরেও তাকায় না নেতারা৷ কিন্তু এবার আর প্রতিশ্রুতিতে চিড়ে ভিজবে না৷ ভোট চাইতে এলে রাজনৈতিক নেতাদের গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ এই পার্বতী খাল দিয়েই এক সময় ব্যবসা বাণিজ্য চলত বনগাঁ, নদীয়ার বিভিন্ন বাজারে৷ এই খালের এক প্রান্ত যমুনা নদীর সঙ্গে এবং অন্য প্রান্ত নদীয়ায় চূর্ণী নদীর সঙ্গে মিশেছে৷ শান্তিনগর, রাগমারা, লক্ষীপুর, রাজারহাট, নহাটা সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এই খালের উপর নির্ভরশীল ছিলেন৷ এই খালের জলেই চলত চাষের কাজ৷ আবার এই খাল থেকে মাছ ধরে জীবীকা নির্বাহ করত মৎস্যজীবীরা৷ তাই এই খাল সংস্কার না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা৷ হুঁশিয়ারি দিল পার্বতী খাল বাঁচাও কমিটি৷ 

আরও পড়ুন-  মহিলাদের জন্য বিরাট আশ্বাস! গেরুয়া ইস্তেহারকে কীভাবে দেখবে প্রগতিশীল নারীসমাজ?

দীর্ঘ দিন খাল সংস্কার না হওয়ায় বৃষ্টি হলেই খালের জল উপচে জলমগ্ন হয়ে পড়ে দু’পাড়ের গ্রাম৷ বন্যার জমা জলে ডেঙ্গি সহ নানা রোগের আশঙ্কায় ভোগেন এলাকার বাসিন্দারা৷ কমিটি এক সদস্যের কথায়, প্রশাসন এবং কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ নিজেদের স্বার্থে এখানে রাস্তা হতে দিচ্ছে না৷ খাল বুজিয়ে জায়গা দখল করা হচ্ছে৷ এই খাল সংস্কার হলে, এখানকার বাস্তুতন্ত্র বদলে যাবে৷ অর্থনীতির উন্নয়ন হবে৷ মৎস্যজীবীরা খেড়েপড়ে বাঁচবে৷
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − five =