তেহট্ট: ভোটের আগের দিনই শুরু হয়ে গেল হিংসা। আজ বৃহস্পতিবার, রাজ্য জুড়ে ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ। তার আগে বুধবারই শুরু হয়ে গেল মারামারির ঘটনা। বুধবার দুপুরে তেহট্টের বেতাই পলিটেকনিক কলেজে প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত হয়েছেন অফিসারকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সংগঠনের তরফে ইতিমধ্যেই ইমেল করে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷
পলাশীপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের ডিসিআরসি কেন্দ্র তেহট্টের বেতাই পলিটেকনিক কলেজ। সেখানে বুধবার দুপুরে পুলিশ ট্র্যাগিং করতে গিয়ে ঠাকুরদাস মাহাতো বলে এক পুলিশকর্মীকে বারবার মাইকে ডেকেও সারা পাচ্ছিলেন না ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সুকান্ত বিশ্বাস। শেষ পর্যন্ত তার খোঁজ পাওয়া গেলে তাকে গাড়িতে ওঠার নির্দেশ দেন সুকান্তবাবু। সেই সময়ই সুকান্তবাবুর উপরে হামলা করেন পুলিশকর্মী ঠাকুরদাস মাহাতো। তিনি ও তাঁর পুলিশকর্মী সহকারীরা সুকান্তবাবুকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারে বলে খবর। এই ঘটনার পর থেকেই ওই বুথে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ভোট কর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে জেলার ভূমি সংস্কার আধিকারিক, তেহট্ট ২ নং ব্লকের বিডিও এবং তেহট্টের এসডিপিও-সহ বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনায় মাথায় ও কোমরে চোট পান সুকান্তবাবু। তাকে তড়িঘড়ি তেহট্টের মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। তেহট্টের এসডিওপি প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যতদূর মনে হচ্ছে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধের ফলেই এই ঘটনা ঘটে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপরমহল থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে বহু চেষ্টা করেও পুলিশকর্মী ঠাকুরদাস মাহাতো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়ে শিক্ষক-শিক্ষা-কর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানিয়েছেন, “যে কারণেই মতবিরোধ হয়ে যাক না কেন, প্রিসাইডিং অফিসারের গায়ে হাত তোলার অধিকার কোনও পুলিশকর্মীর নেই। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি লিখে দাবি জানিয়েছি যে, অবিলম্বে ওই পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।” কিংকরবাবু আরও জানিয়েছেন, “ডিসি-তে পুলিশ ট্যাগিং-এর ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হোক। যেভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতিটি বুথে বুথে পৌঁছে যায়, সেইভাবে রাজ্য পুলিশকর্মীদেরও প্রতিটি বুথে নিয়ে যাওয়া হোক। আগামী নির্বাচনের মধ্যে এই ট্যাগিং ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা।”