কলকাতা: শনিবার লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে নাকা চেকিংয়ের সময় বাইপাসে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবল জখম হয়েছিলেন৷ ঘটনায় তিনজলা থানার কনস্টেবল তন্ময় দাসকে একপ্রকার পিষে ফেলছিল গাড়িটি৷ পায়ের উপর উঠে যায় বেপরোয়া গাড়ির চাকা৷ পায়ে পেয়েছেন গুরুতর চোট৷ ঘটনার কথা জানতে পেরে তিনজলা থানায় ছুটে গিয়েছিলেন কনস্টেবল তন্ময় দাসের স্ত্রী কাকুলিদেবী৷ তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চান৷ কিন্তু তাঁকে থানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ৷ স্বামীর পরিচয় দেওয়ার পরও খুব খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলে কাকুলি দেবী অভিযোগ জানিয়েছেন৷ যদিও, বেপরোয়া গাড়ি চালানো, সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়াসহ অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ কিন্তু, থানায় কেন স্ত্রীকে অপমান করা হল, দফতরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে পুলিশকর্মীর পরিবার৷
আরও পড়ুন- বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে কেন লকডাউন বাংলায়? মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি SUCI-র
জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের গতি প্রকৃতি জানতে থানায় ছুটে যান কাকুলি দেবী। কিন্তু তাঁকে থানা থেকে বের করে দেওয়া। তিনি আহত কনস্টেবলের স্ত্রী বলে পরিচয় দিলেও তাঁকে থানাতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করা হয়৷ তিনি বার বার জানতে চান, স্বামীকে পিষে দেওয়ার চেষ্টা করা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, তাকে সেখান থেকে অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়৷ উল্টে, অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যদের থানার মধ্যে বসিয়ে চা খাওয়ানো ব্যবস্থা করা হয়৷
আরও পড়ুন- এবার মোবাইলে করা যাবে করোনা টেস্ট, ১ ঘণ্টায় রিপোর্ট! নয়া আবিষ্কার IIT খড়গপুরের
এই খবর শোনার পর আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন তন্ময়বাবু। তিনি জানিয়েছেন, অনেক সময় বড়লোক হলে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তাই পরিস্থিতি কী জানতেই তিনি গিয়েছিলেন। এক পুলিশ কর্মীর স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার অন্যান্য পুলিশ কর্মী করলেন বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই ঘটনার ওপর মহল থেকে ডিপার্টমেন্ট থেকে চাপ আসবে। কিন্তু তিনি এর শেষ দেখে ছাড়বেন। এরপর তিনি মন্তব্য করেন, ডিপার্টমেন্ট থেকে অপমান, বাইরে থেকে অপমান, এই ভাবে কাজ করতে পারা যায় না কি। এর থেকে সবজি বিক্রি করলে বেশি সম্মান পেতেন।
ঘটনার সূত্রপাত আজ সকালে৷ ইএম বাইপাসে দুই পুলিশকর্মীকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গাড়ি৷ পরমা আইল্যান্ডের দিক থেকে ওই গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে ছুটছে দেখে উত্তর পঞ্চান্নগ্রামের পুলিশকর্মীদের খবর দেওয়া হয়৷ পরে ওই গাড়ি রুখতে পুলিশকর্মীরা রাস্তায় গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়ার চেষ্টা করেন৷ গড়িটা প্রথমে পেছনে যেতে চেষ্টা করে৷ পরে তা সম্ভব না হওয়ায় সোজা গাড়িটি এগিয়ে যায় গার্ডরেলের দিকে৷ দ্রুত গতিতে যাওয়া ওই গাড়িটি কনস্টেবল তন্ময় দাস ও একজন গ্রিন পুলিশকে ধাক্কা মারে৷ জখন হন তাঁরা৷ পরে স্থানীয়রা গাড়িটি ঘিরে ধরে ভাঙচুর চালান৷ আরোহী এক যুবক ও যুবতীকে গ্রেফতার করে তিলজলার পুলিশ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে বিতর্ক তৈরির হওয়ার পর নস্টেবল তন্ময় দাসের স্ত্রীকে ফোন করে থানার তরফে দুঃখ প্রকাশ করা হয়৷ এই ঘটনা ওসি জানতে না বলে আমাকে ফোন করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন, জানিয়েছেন কাকুলিদেবী৷