কলকাতা: সমাজসেবা ও ত্রাণ বিলি করার মতো কাজে যুক্ত থাকা শিক্ষকেরাও এবার পাবেন শিক্ষারত্ন। তার পাশাপাশি লকডাউনে একজন শিক্ষক কীভাবে পড়াশোনা করিয়েছেন, অনলাইনে কীভাবে পড়িয়েছেন কিংবা মিড-ডে-মিল বিলিতে তাঁর কী ভূমিকা ছিল এসব কিছু বিচার করেই শিক্ষারত্ন দেওয়া হবে বলে ঠিক করেছে শিক্ষা মহল। কিন্তু নিয়মানুসারে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে তবেই শিক্ষারত্নের জন্য আবেদন করা যাবে, ফলে অনেকেরই নাম বাদ গিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের শিক্ষক চন্দন মাইতি এক সময় সুন্দরবনে ত্রাণ বিলি করতেন। অতিমারিতে যে সমস্ত তরুণ শিক্ষকরা ত্রাণ বিলি করেছেন, তাদের বয়সের কারণে এই শিক্ষারত্নের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত হয়নি বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেছেন, 'শিক্ষারত্ন পেতে গেলে যদি শিক্ষকদেরই নিজেদের নাম পাঠাতে হয়, তাহলে সেটা অপমানজনক। আমি সেই কারণেই পুরষ্কারের জন্য আবেদন করিনি। সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের উচিত অঞ্চল থেকে শিক্ষকদের কাজ দেখে নাম পাঠানো।’ এদিকে শিক্ষারত্ন পুরস্কারের দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার তথা স্কুল শিক্ষা দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা দেবাশিস সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নোটিশে যা বলা হয়েছে সেই মতোই ২০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষকদের অনলাইনে নিজেদের আবেদন করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নবকুমার কর্মকারের কথায়, সব জেলায় আমফানের প্রভাব পড়েনি। ফলে সমাজে স্বীকৃতি রয়েছে, নিজের কাজ ঠিক ভাবে সামলেছেন এমন শিক্ষকদেরই শিক্ষারত্ন দেওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে শিক্ষক রত্নদ্বীপ জানিয়েছেন, খেজুরিতে শুভঙ্কর মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি আছেন যিনি নিজেই শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী কিন্তু তিনি মানুষের কাছে রীতিমতো ভিক্ষা করে ত্রাণ বিলি করেছেন। স্কুল শিক্ষা কমিশনারের পাঠান একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে এ বছর মোট ৪০ জনকে শিক্ষারত্ন প্রদান করা হবে। সেখানে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের আবেদনকারীদের ভেরিফিকেশন করে ১৯ আগস্ট তালিকা পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন শিক্ষারত্ন প্রাপকদের নাম ঘোষণা করা হবে।