কলকাতা: আজ বিকেলে: এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণেও এমন উল্লেখ ছিল না। কিন্তু, শহর কলকাতা বা দেশের অন্যান্য শহরে যা হল তা একরকম লজ্জার নামান্তর।
রাত ৯টা কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকার বড় বড় বাতিগুলি এক এক করে নিভে গিয়েছে। জানালা, বারান্দা দিয়ে কালো কালো মাথাগুলি বেরিয়ে পড়েছে। জ্বলে উঠছে মোমবাতি, ছোট ছোট মাটির প্রদীপের সারি বারান্দায় দেখা যাচ্ছে। ঠিক সেই সময়ই তাল কাটল। সারা কলকাতা কেঁপে উঠল গগন বিদারী শব্দবাজিতে।
যেন দীপাবলির রাত এবং সেই রাতে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই যেন সমানে চলছে শব্দ তাণ্ডব। বাড়ির আলো নিভিয়ে মোবাইলের ফ্লাশ, দীপ , মোমবাতি জ্বালিয়ে সারা শহর যে মোহময়ী রূপে ধরা দিয়েছিল, সেই আবেশকে ছিন্ন করে দেয় বাজির শব্দ। পুলিশ সূত্রে খবর, শব্দবাজি ফাটাতে গিয়ে পুলিশের হয়ে শহরে ধরা পড়েছে ৯৮ জন। চলছে জোর তল্লাশি। রাত ৯টা দশের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অকাল দীপাবলি নিয়ে চর্চা শুরু হয়। মোদী বিরোধীদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের সম্মুখ সময় বেঁধে যায়। রাজ্য বিজেপি নেতা সৌরভ সিকদার সংবাদ মাধ্যমে বলেন, যদি কোনও বিজেপি কর্মী এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তবে অন্যায় হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বার্তা না বুঝে রাস্তায় নেমে উৎসব করার ছবি জনতা কারফিউ এর সময় দেখেছে এই শহর। কিন্তু, ভয়ার্ত এই পরিস্থিতিতে অকাল দীপাবলির সমালোচনা করেছ সকলেই। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ করুনা নিয়ে রাজনীতি সমান তালে চলছে। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু সম্প্রতি বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার তথ্য ধামাচাপা দিচ্ছে ঠিক ডেঙ্গির মত।” রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে করোনার মৃতের সংখ্যা সঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিটির হিসাব কেন মিলছে না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, “রাজ্য সরকার আগে বলেছে করোনার মরছে না। নিমুনিয়া, হৃদরোগে মরছে। লুকানো হচ্ছে। সরকার তিন বলেছিল। সাত হয়ে গিয়েছে।” যদিও রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেছেন, কিছু মানুষ কো-মর্বিডিটি বা কিছু বাড়তি মরণ উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন। এমন চার জন মারা গিয়েছেন। যাদের মৃত্যুকে করোনার মৃত্যু বলা যাবে না।” তবে বিতর্ক থামছে না। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।