কলকাতা: মুক্ত শৌচালয় বন্ধ করার প্রকল্পে ডাহা ফেল রাজ্যের ৩৬ পুরসভা।তার মধ্যে আবার অধিকাংশ পুরসভাই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত।বারবার নির্দেশ দেওয়া স্বত্তেও শৌচালয় নির্মাণের প্রকল্প শেষ না করতে পারায় ওই সব পুরসভা গুলির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুর ও নগরন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
নবান্ন সূত্রে খবর সবার বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করতে এবং উন্মুক্ত শৌচালয় বন্ধ করতে ৭ ডিসেম্বর লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল। তা পূরণ করতে পারেনি ওই ৩৬টি পুরসভা। গত ১০ জানুয়ারি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ওই সব পুরসভাকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশে পৌঁছতে না পারলে পুরসভাগুলিকে অন্য ফান্ড থেকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এই ৩৬টি পুরসভার জন্য মুক্ত শৌচ (ওডিএফ) রাজ্য বলে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক ঘোষণা করতে পারছে না। তাতেই অসন্তুষ্ট রাজ্য পুরদপ্তর।
খোলা আকাশের নীচে মলত্যাগ বন্ধ করতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্রীয় সরকার। পঞ্চায়েত মন্ত্রক ও নগরান্নোয়ন মন্ত্রক আলাদা করে কর্মসূচি নিয়ে যাঁদের শৌচালয় নেই, তাঁদের তা করে দিতে উদ্যোগী হয়। রাজ্যে পঞ্চায়েত দপ্তর এই কর্মসূচির নাম দেয়, মিশন নির্মল বাংলা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে অধিকাংশ জেলাকেই নির্মল বলে ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে নদীয়া জেলা প্রথম হয়। কিন্তু পুরদপ্তরের কাজে ঘাটতি দেখা যায়। রাজ্যের ১২৫টি পুরসভার মধ্যে অধিকাংশ পুরসভায় শৌচালয় তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে শেষ হয়। কিন্তু ৩৬টি পুরসভায় নির্দেশ মতো কাজ হয় না। প্রতিটি পুরসভার চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক করে ওই কাজ দ্রুতগতিতে করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
নগরোন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বারবার বলা সত্ত্বেও ৩৬টি পুরসভা কিছুতেই তাদের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারছে না। সেই পুরসভার তালিকায় তৃণমূলের দখলে থাকা সল্টলেক পুরনিগম, আসানসোল পুরনিগম যেমন আছে, তেমনি আছে বাম পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরনিগম। এছাড়াও আছে আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, সিউড়ি, কোচবিহার, বালুরঘাট, বুনিয়াদপুর, গঙ্গারামপুর, দার্জিলিং, কার্শিয়াং, ভদ্রেশ্বর, ধুপগুড়ি, জলপাইগুড়ি, মাল, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, ইংলিশবাজার, ওল্ড মালদা, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, কান্দি, মুর্শিদাবাদ, কুপার্স ক্যাম্প, তাহেরপুর, ভাটপাড়া, খড়ার, ক্ষীরপাই, কাটোয়া, মেমারি, তমলুক, ঝালদা, পুরুলিয়া, ডালখোলা, কালিয়াগঞ্জ এবং রায়গঞ্জ পুরসভা। এই সব পুরসভাকে চিঠি দিয়ে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মুক্ত শৌচালয় বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নগরোন্নয়ন দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই সব পুরসভার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমাদের রাজ্যের মুখ পুড়ছে। নির্দেশ মতো শৌচালয় তৈরি না হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার মুক্ত শৌচালয় রাজ্য বলে ঘোষণা করতে পারছে না। সামনেই ভোট, প্রতিটি পুরসভাই চাইবে, প্রকল্প অনুযায়ী টাকা আসুক। টাকা না থাকলে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। এতে ভোটে প্রভাব পড়তে পারে। সেই সঙ্গে জঞ্জাল অপসারণ নিয়ে কেন্দ্রীয় পুর-নগরোন্নয়ন দপ্তর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। নানা ধরনের কর্মসূচি নিয়েছে বিভিন্ন পুরসভায়।