কলকাতা: প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না দিলে আন্দোলন জারি থাকবে সারা বাংলায়, দ্বিতীয় দফার ভোটের মুখে নির্বাচন কমিশনকে ফের হুঁশিয়ারি শিক্ষক সংগঠনের৷
লোকসভা নির্বাচনে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটার ও ভোটকর্মীদের সুনিশ্চিত নিরাপত্তার দাবিতে রাজ্যব্যাপী গড়ে তোলা আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে শিক্ষক শিক্ষা কর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ। তাদের আন্দোলনের চাপে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আরিজ আফতাব গত ৮ এপ্রিল প্রেসনোট জারি করে ভোট কর্মীদের সুনিশ্চিত নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম দফার নির্বাচনে যেসব বুথে রাজ্য পুলিশ দিয়ে নির্বাচন হয়েছে, সেই সমস্ত বুথ থেকে এসেছে একাধিক অভিযোগ৷ রিগিং, বুথ দখল, ইভিএম মেশিন ভেঙে দেওয়া মতো বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে৷ আজ ঐক্যমঞ্চের এক প্রতিনিধিদল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ ও দাবিপত্র পেশ করে৷
তাদের অভিযোগ, বেশ কিছু জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রেখে রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে প্রথম দফার নির্বাচনে। বাকি পর্বের নির্বাচনগুলিতে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট গ্রহণ করার জোরালো দাবি রাখে তারা। যথাযথ নিরাপত্তা না দিয়ে দুজন প্রিজাইডিং অফিসারকে শোকজ করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ঐক্যমঞ্চ। ঐক্যমঞ্চের পক্ষ থেকে এ দাবিও জানানো হয়, প্রতিটি বুথে ওয়েব ক্যামেরা লাগিয়ে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলে অনেক সমস্যা মিটতে পারে। প্রতিটি বুথে ওয়েব ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকলে দুষ্কৃতীরা উৎপাত করার সাহস পাবে না।
আজ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আরিজ আফতাব ভিডিও কনফারেন্সে থাকায় ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অতিরিক্ত নির্বাচন কমিশনার সঞ্জয় বসু। তিনি ঐক্যমঞ্চের প্রতিনিধিদের বলেন, রাজ্যব্যাপী তাদের ক্ষোভ বিক্ষোভের ফলেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ানো হয়েছে। দ্বিতীয় ও পরবর্তী দফার ভোটে আরও অধিক সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে বলেও জানান তিনি৷ তিনি সমস্ত অভিযোগ ও দাবিপত্র আজই মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাবের কাছে তুলে ধরবেন বলেও আশ্বাস দেন৷ এই অভিযোগ ও দাবিপত্র দিল্লির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছেও তারা পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি৷
ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে আজ উপস্থিত ছিলেন মঞ্চের সভাপতি বিশ্বজিৎ মিত্র, অফিস সম্পাদক অয়ন পাল, সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য অনামিকা চক্রবর্তী, তমাল মণ্ডল, যুগ্ম সম্পাদক কিংকর অধিকারী৷ ডেপুটেশন শেষে কিংকর অধিকারী বলেন, “প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা না করলে সারা বাংলাজুড়ে যে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে তাকে কোনোভাবেই স্তিমিত করা যাবে না। প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী সহ নিরাপত্তার বিষয়টি যতক্ষণ না নিশ্চিত হচ্ছে ততক্ষণ সারা রাজ্যের প্রতিটি জেলায় প্রতিবাদ প্রতিরোধ চলতে থাকবে৷’’ আজ ডেপুটেশনের কপি দিল্লির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মেল আইডিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ঐক্যমঞ্চের তরফ থেকে৷