যাদবপুরে নাটের গুরু সৌরভ ত্রাস ছিলেন নবাগতদের কাছে! কতটা প্রভাবশালী এই সৌরভ?

যাদবপুরে নাটের গুরু সৌরভ ত্রাস ছিলেন নবাগতদের কাছে! কতটা প্রভাবশালী এই সৌরভ?

নিজস্ব প্রতিনিধি: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় একদিকে ধৃতের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। যা দেখলে চক্ষু চড়কগাছ হতে বাধ্য। সেখানে বারবার ঘুরেফিরে উঠে আসছে ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীর নাম। বিশ্ববিদ্যালয় বা হস্টেলে সৌরভ যে কতটা প্রভাবশালী ছিলেন তা নিয়ে বহু ঘটনার কথা সামনে আসছে। সম্প্রতি একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে সৌরভের ছবি সামনে এসেছে। যদিও সেই ছবি যাচাই করেনি ‘আজ বিকেল’। 

শোনা যাচ্ছে সৌরভের সঙ্গে একাধিক বিশিষ্টের যোগাযোগ ছিল। সেই অর্থে সৌরভকে প্রভাবশালী বলা যেতেই পারে। জানা গিয়েছে হস্টেলে নতুন ছাত্ররা আসার পর সৌরভকে তাঁদের বাবা বলে ডাকতে বাধ্য করা হতো। সবচাইতে বড় কথা বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র তিন তলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে যাওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই সৌরভের নেতৃত্বে হস্টেলে সাধারণ বৈঠক অর্থাৎ জিবি বসে। সেখানে পুলিশকে কে কি বলবেন তা শিখিয়ে দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, সৌরভের পাশাপাশি সিনিয়র ছাত্রদের হস্টেলে এতটাই দাপট ছিল যে, খোদ হস্টেল সুপার বিল্ডিংয়ের উপরে ওঠার সাহস পেতেন না। ছাত্র পড়ে যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস’ রজত রায়কে ফোন করে এক আবাসিক ঘটনাটি জানান। সূত্রের খবর, তখন রজত বিষয়টি হস্টেল সুপারকে জানান। কিন্তু হস্টেল সুপার উপরে উঠতে ভয় পেতেন বলে যাননি বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি নতুন আসা ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হস্টেলে ঘরের ব্যবস্থা সৌরভ করে দিতেন বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে। হস্টেলে সৌরভ যে কতটা হোমরাচোমড়া হয়ে উঠেছিলেন এসব ঘটনাতেই তা স্পষ্ট।  

সবমিলিয়ে এটা পরিষ্কার যাদবপুর মেন হস্টেলে বছরের পর বছর ধরে তাণ্ডব চালিয়ে এসেছেন সিনিয়র ছাত্ররা। তাণ্ডব চালানোর সেই ব্যাটন বছরের পর বছর ধরে হাত বদল হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে যা এসেছিল সৌরভ-সহ অন্যান্যদের কাছে। কিন্তু ধরা পড়ার পর সকলেই নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। শুরু হয়েছে একে অপরের দিকে দায় ঠেলার পালা। অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা। কিন্তু সেই চেষ্টা কাজে লাগছে না। তাই ধৃতদের আদালতে পেশ করার সময় সরকারি আইনজীবীকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলতে শোনা গিয়েছে,”এঁরা সফল অপরাধী, কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা!” অর্থাৎ নিজেদের বাঁচাতে গিয়ে যে সমস্ত জারিজুরি ধৃতরা করছেন তা ধরা পড়ে যাচ্ছে পুলিশের কাছে। এই পরিস্থিতিতে একটাই প্রশ্ন রয়েছে সবার, এবার কি তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে চিরতরে বন্ধ হবে র‌্যাগিং? নাকি সবকিছু ধামাচাপা পড়ে গেলে হস্টেল আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে? একমাত্র সময়ই এর উত্তর দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × three =