ক্যানিং: দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের ক্যানিং মহকুমা৷ দিনের পর দিন আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেশ কিছু অসাধু লোকজন ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধ্বংস করছে৷ তৈরি হচ্ছে অবৈধ মাছের ভেড়ি৷ একইসঙ্গে জবরদখল করে তৈরি হচ্ছে অবৈধ ঘরবাড়ি। শুধু তাই নয়৷ এমনকি ক্যানিং মাতলা নদীর চরও চুরি হচ্ছে প্রায় দিনই । জানা গিয়েছে, বেশ কিছু অসাধু লোকজন মাতলা নদীর চরে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করার পর এলাকা জবরদখল করে তাতে ঘরবাড়ি তৈরি করে লক্ষ লক্ষ টাকা মুনাফা লুঠছে।আর এই সব ঘটনা পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসতে নড়ে চড়ে বসলেন বিভাগীয় দফতরগুলি।
ইতিমধ্যে পুলিশ প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে এই সব ঘটনার পিছনে কারা কারা জড়িত।আর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। এই ঘটনায় জড়িত থাকা মাতলা ও দিঘীরপাড় অঞ্চলের বেশ কিছু প্রভাবশালী লোকজন গ্রেফতার হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে সোমবার মাতলা নদীর চরে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে মাছের ভেড়ি তৈরি করার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম দুর্গাপদ সরদার, রবীন সরদার, মারুফ মৃদ্দে। স্থানীয় সূত্রে জানা জানা গিয়েছে সোমবার দুপুরে বাসন্তীর কামারডাঙ্গা সরদার পাড়া এলাকায় মাতলা নদীর চরে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে অবৈধ ভাবে জেসিবি দিয়ে বড় এলাকা জুড়ে বাঁধ দিয়ে অবৈধ মাছের ভেড়ি তৈরি করছিল বেশ কিছু অসাধু লোকজন। আর এই খবর গোপন সূত্রে পেয়ে বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা ও বাসন্তী থানার আইসি নেতৃত্বে স্পেশাল পুলিশ টিম অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং জেসিবি টি আটক করে। এবিষয়ে কী জানালেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়? তিনি বলেন, যারা ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করছে তাহলে আদতে নিজেদেরকেই ধ্বংস করছে৷
বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করা মানে এখানকার বাসস্থান, এখানকার গ্রাম সবকিছু উজার হয়ে যাবে৷ যারা ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে নিজেদের আখের গোছাচ্ছেন আমি সরকারের কাছে এদের শাস্তি দেওয়ার অনুরোধ করব৷” প্রশাসনও সজাগ দৃষ্টি রাখবে৷ এই ঘটনায় পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। ডব্লুবিএলআর আইনের সেকশন ৪ এবং পশ্চিমবঙ্গ গাছ সংরক্ষণ ও সংরক্ষণ আইন ২০০৬ এর সেকশন ৪ এ ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে ।
এপ্রসঙ্গে ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক৷ আমরা জানতে পারছি এখানে বেশ কিছু অবৈধ কাজকর্ম হচ্ছে৷ অবিলম্বে যাতে এই কাজ বন্ধ হয় তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে ভেড়িগুলি সিজ করার ব্যবস্থা করা হোক৷”
যদিও বিজেপির অভিযোগ, এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে শাসক দল৷ শাসক দলের মদতেই এমনটাই হচ্ছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় আর কারা কারা জড়িত আছে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে ধৃতদের আলিপুর কোর্টে তোলা হয়।