কলকাতা: করোনা আবহে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল বেসরকারি বাস পরিষেবা৷ অবশেষে পথে বাস নামলেও বাড়তি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা৷ এই নিয়ে সরকারের সঙ্গে বাস সংগঠনের মধ্যে টানাপোড়েনও অব্যাহত৷ এবার রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীর ঘোষণায় পরিস্থিতি আরও জটিল হল বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের৷ কারণ পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম রবিবারও ফের স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ‘‘অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না৷ যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার টিকিট দেখিয়ে থানায় অভিযোগ করলে এবং সত্যতা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বাসের পারমিট বাতিল করে দেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন- চার্জশিট তথ্যে হাইকোর্টে অস্বস্তিতে রাজ্য, বিপাকে CID
মন্ত্রীর এহেন ঘোষণার পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া ধেয়ে এসেছে বাস মালিক সংগঠনের দিক থেকে৷ জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের যুগ্ম সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘শুধু বাসের ক্ষেত্রেই এই নিয়ন্ত্রণ কেন? অটোর ক্ষেত্রে এই নিয়ন্ত্রণ নেই কেন?’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা বেশি ভাড়া নিচ্ছি না৷ কিন্তু দীর্ঘদিন বাস বসে থাকায় বহু যন্ত্রাংশ বসে গিয়েছে৷ সেগুলি পালটাতে অনেক খরচ হয়েছে৷ অন্যদিকে এতদিন বাস বসে থাকার লোকসান৷ তার ওপর প্রতিদিনই বাড়ছে ডিজেলের দাম৷ ফলে জ্বালানি খরচও বেড়ে গিয়েছে৷ বাধ্য হয়েই আমরা বাস মালিক সংগঠনের সদস্যরা ঐক্যমত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট গন্তব্য অনুযায়ী সামান্য কিছু অনুদান চাইছি৷’’
প্রসঙ্গত, লকডাউনের পর ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে বহু বেসরকারি বাস মালিকই পথে বাস নামাননি৷ বরং ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিলেন৷ যদিও ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে না বলে সরকারের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়৷ এরপর বাস মালিক সংগঠনের কর্মকর্তারা নিজেরা বসে অল্প ভাড়া বৃদ্ধি করেন৷ তারপর থেকেই রাস্তায় নেমেছে বেসরকারি বাস৷ অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়াকে কেন্দ্র করে কলকাতার বিভিন্ন রুটে বাস কনডাক্টরের সঙ্গে বচসা জড়িয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে যাত্রীদের৷ এহেন পরিস্থিতিতে মন্ত্রীর ঘোষণার জেরে কনডাক্টরদের আরও বেশি সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাস মালিকেরা৷ সেক্ষেত্রে সরকার নয়া ভাড়া নির্ধারিত না করলে প্রয়োজনে ফের বাস চালানো বন্ধও করে দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাস মালিক সংগঠনের নেতারা৷
অল বেঙ্গল বাস–মিনিবাস সমন্বয় সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘দিনের পর দিন পেট্রল, ডিজেলের দাম বেড়েই যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। অথচ সব দায় আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে৷ এমন চললে তো আর লোকসান করে বাস চালানো সম্ভব নয়৷’’