ঝাড়গ্রাম: তৃণমূলে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা আছে! ঝাড়গ্রামে নিজে মুখে স্বীকার করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাংলায় বিজেপির উত্থানের পূর্বভাস পেয়ে কার্যত নিজেদের দোষ স্বীকারের পথে হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেনে নিলেন তাঁর দলে কিছু নেতা দুর্নীতিগ্রস্ত। তবে সেটা মাত্র ২ শতাংশ। বাকি ৯৮ শতাংশ নয়। দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যবস্থা নেয় বলেও ঝাড়গ্রামে বেলপাহাড়ির মঞ্চ থেকে জানান তৃণমূলনেত্রী।
রবিবার নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের উপরে যে ভোটাররা ক্ষুব্ধ, তা মেনে নিয়ে মমতা বলেন, “কিছু স্থানীয় নেতার উপরে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে জানি। কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিই আমি। কিন্তু গোটা তৃণমূল কংগ্রেস চোর নয়। আমি চোর নই, পার্থ চট্টোপাধ্যায় চোর নয়, সুকুমার হাঁসদা চোর নয়।” মমতা মানুষের ক্ষোভ কমাতে আরও বলেন, “সব জায়গায় ভালমন্দ আছে। যারা দুর্নীতি করেছেন তাদের হারিয়ে দিয়েছেন। ঠিকই আছে। নতুন যারা এসেছে তারা কাজ করবে। ক্ষোভ আছে অনেকের বিরুদ্ধে। ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক।”
বলেন, ‘‘জঙ্গলমহল আমার খুব প্রিয় জায়গা। এক সময় এই জঙ্গলমহল নাম শুনলে লোকে ভয় কাঁপত। আমি ভাবতাম কবে আমার জঙ্গলমহল শান্তিতে হাঁসবে? আগের সরকারের আমলে জঙ্গলমহলকে অবহেলা তাচ্ছিল্যের কথা আমরা ভুলিনি। এখানকার মানুষ খেতে পেতনা, কোনও কাজ ছিল না, পরিবহণ ব্যবস্থা ছিলনা, চিকিৎসার ন্যুনতম বন্দোবস্ত ছিলনা। গত আট বছরে আমি বারবার এখানে ছুটে এসেছি এটা দেখতে যে এখানে প্রতি প্রান্তে যাতে উন্নয়ন হয়। এখন জঙ্গলমহলে শান্তির আবহাওয়া। এখানকার পরিকাঠামো তৈরী করা হচ্ছে। মাল্টি জিম, ইন্ডোর স্টেডিয়ামের পাশাপাশি তৈরী হয়েছে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামও। এছাড়াও অসংখ্য কাজ হয়েছে এখানে। স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, হোস্টেল – মানুষের প্রয়োজনীয় সব কাজ আমরা করেছি। আমি প্রায়ই এখানে আসি। কিছু মানুষ আছে যারা পাঁচ বছরে একবার এখানে আসে। মোদী বাবু সুভু ভোটের সময় হলে আপনাদের কাছে আসে।’’
ফনি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত দুদিন ধরে ভীষণ দুর্যোগের আবহাওয়া। আমিও দুদিন সভা ক্যান্সেল করে খড়গপুরে ছিলাম কারণ ঝড়ের ওড়িশা হয়ে খড়গপুরে ধাক্কা খেয়ে ঝাড়গ্রামে ঢোকার কথা ছিল। সেই জন্য আমি আগে থেকেই খড়গপুরে বসে ছিলাম। গতকালও আজ আমি অনেক জায়গা ঘুরে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব নিয়েছি। এখানে ৫ হাজার মাটির বাড়ি ও ২৯ হাজার ৫০০ বাড়ি আংশিক ভেঙেছে। আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না। যাদের বাড়ি নষ্ট হয়েছে বা কৃষির ক্ষতি হয়েছে, তাদের সরকার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে। সরকার সবসময় আপনাদের পাশে আছে ও থাকবে।’’