কলকাতা: কোভিড ১৯ ভাইরাস মোকাবিলার ভ্যাকসিনের খোঁজ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গোটা বিশ্বের গবেষকরা করোনার প্রতিষেধক তৈরির কাজে ব্যস্ত। এই পরিস্থিতিতে মারণ ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় সবচেয়ে মূল্যবান হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ। করোনার ভয়াবহ প্রকোপের মুখে পড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুমকি দিতেও ছাড়েননি ভারতকে। এই মুহূর্তের বহু প্রয়োজনীয় এই ওষুধটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের নাম। সংবাদসূত্রের দাবি, তাঁর প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যালসই ভারতে সর্বপ্রথম ক্লোরোকুইন ওষুধের তৈরি করে। পরে আসে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন।
বিংশ শতকের গোড়ার দিকে স্বদেশি আন্দোলনের সময় দেশীয় শিল্পের উন্নতিসাধনেই প্রফুল্লচন্দ্র রায় গড়েছিলেন বেঙ্গল কেমিক্যালস। বর্তমানে যার নাম বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ১২০ বছরের এই সংস্থাটি মাঝে বেসরকারিকরণেরও উদ্যোগ নিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। যদিও তা আটকাতে সিটু-সহ অন্যান্য সংগঠনগুলি এগিয়ে এসেছিল। সূত্রে প্রকাশ, হাইকোর্টে মামলাও করেছিল বামরা। সেই বেঙ্গল কেমিক্যালস এখন আলোচনার শীর্ষে।
মারণ ভাইরাস করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যে ওষুধকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট 'গেম চেঞ্জার' বলেছিলেন, সেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে সংস্থাটি। ব্যাপক উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে তাদের। এই মুহূর্তে যা কাঁচামাল রয়েছে, তাতে ১০ লক্ষ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেটের জোগান দিতে পারবে তারা। এছাড়াও সংবাদসূত্রে জানা গেছে, ৫ লক্ষ ট্যাবলেট ইতিমধ্যেই তাদের সংগ্রহে রয়েছে। করোনার এই ভয়াবহ সময়ে গোটা দেশ তথা বিশ্বের কাছে ভরসার নাম ১৯০১ সালে তৈরি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের বেঙ্গল কেমিক্যালসের নাম।
কোভিড ১৯-এর জেরে বিশ্বের 'ফার্স্ট কান্ট্রি' আমেরিকারও হিমসিম খাওয়ার জোগাড়। এর আগে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধই যে করোনা ভাইরাস রুখতে 'গেম চেঞ্জার'-এর ভূমিকা নিতে পারে, তা জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, 'আমরা খুবই ভাল ফল পেয়েছি। আশাকরি, আমরা ওই ড্রাগ শিগগিরই সহজলভ্য হবে। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) দারুণ কাজ করেছে। অনুমোদন প্রক্রিয়া চলছে।'
মার্কিন মুলুকে করোনার প্রভাবে তৈরি হয়েছে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি। এই অবস্থায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে অনুরোধের সঙ্গে হুমকি মিশিয়েই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহের কথা বলেছেন তিনি। আজ গোটা বিশ্বের নজর যে ওষুধের দিকে তাকিয়ে, তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার নাম। জড়িয়ে রয়েছে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের নামে। এই সংস্থাটিররই বেসরকারিকরণের কথা ভেবেছিল কেন্দ্র, নেটিজেনদের একাংশ অবাক হয়েছে এটা ভেবেও।