কলকাতা: শ্রমদফতরের বৈঠকে চরম অশান্তি বাঁধলো। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য শাসকদলের মন্ত্রীরা, ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটকের মত মন্ত্রী। তাদের সামনেই প্রবল উত্তেজনা, চেয়ার ছোড়াছুড়ি এবং বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের পোস্টারে জুতো! সব মিলিয়ে অস্বস্তিকর পরিবেশে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
জানা গিয়েছে, এদিন নেতাজি ইন্ডোরে বৈঠক ছিল সেলফ এমপ্লেড লেবার অর্গানাইজেশনের। একাধিক দাবি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা এসেছিলেন এই বৈঠকে যোগ দিতে। কিন্তু কোনোরকম সমাধানসূত্র না বেরোনোর ফলে প্রবল উত্তেজনা সৃষ্টি হয় বৈঠক শেষের পর। অসংগঠিত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষার খাতে যে টাকা তোলা হতো তার জন্য এই অরগানাইজেশন কমিশন পেত। কিন্তু এপ্রিল মাস থেকে সেই কমিশন বন্ধ হয়ে গেছে তাদের। ফলে, টানা ৯ মাস বেতন পাচ্ছেন না শ্রমিকরা৷ মূলত এর প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ এবং অবরোধ করেন তারা।
উত্তেজনা এতটাই বেশি ছড়িয়ে পড়েছিল যে নেতাজি ইন্ডোরের সামনের গেট, হোডিং এবং ফ্লেক্স ভেঙে ফেলা হয়। ছিঁড়ে ফেলা হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টার, জুতো ছোড়া হয় রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের পোস্টারে। তিনিও অবশ্য এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করছেন, বেতনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ডাকা হলেও এই দিনের বৈঠকে সেই নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি কোন মন্ত্রী। এতে তাদের ক্ষোভ আরো বৃদ্ধি হয়। তার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন তারা। বিক্ষোভকারীরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের তরফে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তাদের, টাকা-পয়সার আশায় তারা এখানে সমস্যা সমাধানের জন্য এসেছিলেন, কিন্তু আদৌ কিছুই হয়নি।
একই সঙ্গে তাদের আরও বক্তব্য, বেতন কাঠামো এবং সামাজিক সুরক্ষার মতো বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তাদের, কিন্তু সে ব্যাপারেও আজ কোন রকম আলোচনা হয়নি। তাদের স্পষ্ট কথা, তাদের যে সমস্ত দাবি রয়েছে তা যতক্ষণ না পর্যন্ত মেটানো হবে তারা এইভাবে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। নেতাজি ইন্টারেস্ট সামনে আজকের এই ঘটনার জন্য স্বাভাবিকভাবেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বিক্ষোভকারীরা রাজ্যের মন্ত্রীদের প্রতি যেভাবে তাদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাতে অবশ্যই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ ইতিমধ্যেই পার্শ্ব শিক্ষকদের বিক্ষোভ নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে শাসক দল, এর পাশাপাশি অসংগঠিত শ্রমিকদের রাস্তা অবরোধ এবং বিক্ষোভের ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে তাদের পক্ষে।