কলকাতা: এক আধবার নয়, ৩ বার ছাত্রীর ধর্মের উল্লেখ! উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল ঘোষণার সময় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত ছাত্রীর নাম না বলে ‘মুসলিম’ বলে বিতর্কে জড়ালেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রধান মহুয়া দাস।
সংসদের প্রধানের কাছে ছাত্রীর নাম জানতে চাওয়া হলে তিনি জবাবে বলেন, ‘‘ওয়েবসাইট দেখে নেবেন।’’ ওয়েব সাইটে গিয়ে দেখা যায় উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর ৪৯৯ পেয়েছে মুর্শিদাবাদের রুমানা সুলতানা। মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি রাজা মনীন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুমানা। ২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও রাজ্যে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছিল রুমানা সুলতানা। কিন্তু, উচ্চমাধ্যমিকের আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার সময় ছাত্রীর নাম না উল্লেখ করে তার ধর্মের উল্লেখ করায় বিতর্ক শুরু হয়েছে।
নেটমাধ্যম থেকে রাজনৈতিক মহল, বিতর্কের সুর চড়েছে সর্বত্র। সুযোগ বুঝে, নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের নিন্দায় সরব হয়েছে বিরোধী পক্ষ। সংসদ প্রধান মহুয়া দাসের মন্তব্যের নিন্দা করে টুঁইটারে সক্রিয় হয়েছেন অমিত মালব্য। তবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক না-করার আবেদন জানিয়েছে রুমানা। যদিও সে মনে করে ‘‘মুসলিম না বলে একজন ছাত্রী বললেই বেশি ভাল হত। তবে এটা নিয়ে কোনও বিতর্ক কাঙ্খিত নয়। কিন্তু, না রুমানার আবেদনেও থামে নি বিতর্ক। মহুয়া দাসের মন্তব্যের জেরে শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষক ঐক্যমঞ্চের প্রতিনিধিরা শুক্রবার বিধাননগরে বিদ্যাসাগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। সভাপতির পদত্যাগও দাবি করেন।
অন্যদিকে, আবেগের বশেই গতকাল উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত রুমানা সুলতানার নাম ঘোষণার আগে মুসলিম কন্যা বলে ফেলেছেন বলে সাফাই দিয়েছেন সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস। মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ বিপরীত মতামত পোষণ করেছেন নেটিজেনরা। তাদের কেউ বলছেন, একজন মুসলিম মেয়ে এত ভাল ফল করেছেন, সেটা অবশ্যই বলা উচিত। কারণ, এখনও এ রাজ্যে মুসলিম মহিলাদের অনেক বাধাবিপত্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আবার অন্যপক্ষের বক্তব্য, কেন ভাল ফলাফলের জন্য কোনও কৃতী পড়ুয়ার ধর্মকে সামনে আনতে হবে? সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার কাছে এটা বিরম্বনার বিষয়, কেননা এমনটা তো নয় যে ওই পড়ুয়া তার ধর্ম বা জাতের নিরিখে পরীক্ষায় ভাল বা মন্দ ফল করেছে?