হওড়া: দক্ষিণবঙ্গের হাওড়া জেলায় ইতিমধ্যেই করোনা হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বেশ কয়েকটি এলাকা। এই এলাকাগুলি থেকে পরপর করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলায় এবং বিগত দশদিনে তিন জনের মৃত্যুর পর শনিবার থেকেই শুরু হয়েছিল হটস্পট এলাকাগুলিতে বিশেষভাবে লকডাউনের প্রস্তুতি শুরু করেছিল হাওড়া পুরসভা। সোমবার থেকে নির্দেশিকা সম্পূর্ণভাবে কার্যকর করা হল।
হটস্পট বা মাইক্রোপ্ল্যানিং হিসেবে চিহ্নিত গোলাবাড়ি, সালকিয়ার মালিপাঁচঘড়া এলাকার ৬, ৭ এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ড সম্পূর্ণভাবে লকডাউন করা হয়েছে।, হরগঞ্জবাজার, শিবপুর, অরবিন্দ রোড, হাওড়া ময়দান এলাকার একাংশ, ধুলাগড়ের উত্তর মল্লিকপাড়ায় এলাকাগুলিতে সম্পূর্ণ-লকডাউন প্রক্রিয়া কার্যকর করা হয়েছে। অর্থাৎ এই এলাকায় সাধারণ লকডাউনের থেকেও বাড়তি নিয়মবিধি জারি রাখতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সালকিয়া, বামুনগাছি, হাওড়া ময়দান, মল্লিকফটক, শিবপুর, কাজিপাড়া প্রভৃতি এলাকাতেও ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাওড়া ময়দান, বঙ্গবাসী মোড়, মল্লিক ফটক, জিটি রোড সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের নাকা চেকিং চলছে। ফোরশোর রোড থেকে জিটি রোডে ঢোকার সব রাস্তা ও গলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের গাড়ি ছাড়া সমস্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিয়ম লঙ্ঘন করলে স্পট ফাইন দিতে হবে। এমনকি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
এই মুহূর্তে এলাকাবাসীদের বাড়ি বাইরে বেরোনো সম্পূর্ণ বন্ধ। এলাকার বাইরে যেতে বা এলাকায় ঢুকতে বিশেষ অনুমতি নিতে হচ্ছে। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিসপত্র কয়েকটি সংস্থার মাধ্যমে বাসিন্দাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে হাওড়া পুরনিগম। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে মুদিখানার অন্তত ৪৩টি সামগ্রী হোম ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাজারদরের সমস্ত জিনিসপত্র দেওয়া হচ্ছে। পরিষেবা দিতে রয়েছে একটি হেল্প ডেস্ক।
তৈরি রাখা হয়েছে একটি ফুড চেইন। প্রথমে ১৮০০১২১৫০০০০০ এই টোল ফ্রি নম্বরে জিনিসের অর্ডার নেওয়া হবে হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে। এরপর অর্ডার অনুযায়ী জিনিস বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। হোম ডেলিভারির জন্য কোনো অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবেনা এলাকার বাসিন্দাদের। খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি দুধ এবং ওষুধ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। হাওড়া পুরসভার কমিশনার বিজিন কৃষ্ণা জানিয়েছেন, ফোনে একসঙ্গে ১০টি বাড়ির অর্ডার নেওয়া হবে।
পরিষেবা দিতে এলাকার বাসিন্দাদের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ক্লাব এবং প্রাক্তন কাউন্সিলারদের সাহায্যে। পাশাপাশি যোগাযোগ করা হচ্ছে স্থানীয় বাজার এবং পাড়ার মুদি দোকানগুলির সঙ্গেও। এদিকে হাওড়ায় মে সমস্ত এলাকায় সাধারণ লকডাউন চলছে সেখানেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। বাইরে বেরোলে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, বেলা ১১ টার মধ্যে সমস্ত দোকানপাট বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাওড়া পুরনিগমেরপক্ষ থেকে।