কলকাতা: একটা নবান্ন অভিযান। একটা প্রাণের বিনাশ। একটা গোটা পরিবারের সর্বনাশ। DYFI কর্মী মইনুল ইসলাম মিদ্যার মৃত্যুকে এই ভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। বাম সংগঠনের নবান্ন অভিযান সফল করতে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। তবে সেই সফল করার স্বপ্ন অসফল রয়ে গেল তাঁর। জীবন দিয়ে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভের নতুন সংজ্ঞা লিখলেন তিনি।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় কার্যত রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে মইনুলের পরিবার। বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং তিন কন্যা সন্তানের এখন কী হবে সেই প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারছেন না। পরবর্তী ক্ষেত্রে যদিওবা সরকারের তরফে কোনরকম সাহায্য আসে, তাহলেও কি শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে পারবে মইনুলের পরিবার? আপাতত এই প্রশ্নের উত্তর অজানা। তবে পাড়ার ছেলে ফরিদের মৃত্যুতে আইনি পথে নামতে চান তারা, একই সঙ্গে আর্থিক সহযোগিতার আশাও রয়েছে মইনুলের পরিবারের। এই ঘটনার ভবিষ্যৎ কোন দিকে ঘুরবে বা আদৌ ঘটবে কিনা সেই নিয়ে এখন তর্ক চলবে অবশ্য ভাবে। মইনুলের এক পড়শী কাকা জানাচ্ছেন, এদের পরিবারকে ক্ষেতমজুর বললেও ভুল হবে, অটো চালিয়ে রোজগার করত মইনুল। এবার পরিবারের ভরণ-পোষণ কিভাবে হবে, কে চালাবে এই পরিবার, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা চলছে। অন্যদিকে মইনুলের স্ত্রী জানাচ্ছেন, নবান্ন অভিযানে যাচ্ছেন এই কথা বলেই বাড়ি থেকে বেরোননি তিনি। বর্ধমানের ননদের বাড়িতে মেয়ের জন্য বই আনতে যাওয়ার নাম করে কলকাতায় এসেছিলেন মইনুল! এক কথায় স্ত্রীকে মিথ্যে কথা বলে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। এমনকি তিনি এও জানেন না তার স্বামী মইনুল কতদিন ধরে রাজনীতি করছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাঁর।
এদিকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কথা বলতে গিয়ে নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি কোনও মৃত্যুকে সমর্থন করি না৷ যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক৷ তবে তিনি সকালে সুজন চক্রবর্তীকে ফোন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন, একইসঙ্গে বলেছেন, যে কারণেই মৃত্যু হয়ে থাক না কেন তাঁর পরিবার যদি চায় তাহলে কোনও একজন সদস্যকে চাকরি দেওয়া হবে৷ এছাড়াও তাঁদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করার জন্যও সরকার প্রস্তুত বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।