কলকাতা: করোনা অতিমারীর আবহে যে অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে গোটা বিশ্ব৷ ভ্যাকসিনের আবিষ্কারের পর সেই বেহাল আর্থিক অবস্থার মেরামতের চেষ্টা শুরু হয়েছে ভারতেও। এই আবহে দু’দিন বাদে আগামী অর্থবছরের নতুন বাজেট পেশ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। তবে শুধু কেন্দ্র নয়, বাজেট অধিবেশন বসতে চলেছে রাজ্য বিধানসভায়৷ কিন্তু সেই অধিবেশনের থাকবে না রাজ্যপালের ভূমিকা৷ সরকারি এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷
রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সূচনায় তাঁর অভিভাষণ পর্ব বাদ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়৷ রাজ্যপালের সংবিধান নির্দিষ্ট ভূমিকার কথা তুলে ধরে টুইটে ধনখড় বলেন, সংবিধানের ১৭৬’এর এ ধারা অনুযায়ী, রাজ্যপালের অভিভাষণের মধ্য দিয়ে বছরের প্রথম বিধানসভা অধিবেশন শুরু হয়৷ এর অন্যথা হয় না৷ অথচ একমাত্র এরাজ্যে বিধানসভায় এবার তা হচ্ছে না৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কোনওভাবেই সংবিধানের এই নিয়ম এড়িয়ে যেতে পারে না বলে রাজ্যপাল জানিয়েছেন৷ কিন্তু, কেন রাজ্যপালকে এড়িয়ে বাজেট অধিবেশন? জবাব দিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ৷
একুশের নির্বাচনের আগে রাজ্য বিধানসভার শেষ অধিবেশনে বাজেট পেশ করা হবে রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াই, সংবাদমাধ্যমের এমনটাই জানিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে চলতি বিধানসভার অধিবেশন ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রাখার কথাও জানিয়েছেন তিনি। আগামী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায়। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, তেমনটাই জানা গেছে বিধানসভা সূত্রের খবরে। এরপর নতুন বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ। কিন্তু এবার বাজেট পেশের সময় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভাষণ শোনা যাবে না।
বস্তুত, ইতিমধ্যে বিধানসভার প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া। বিধানসভার পরম্পরার দিকে তাকালে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে৷ এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতারাও। বাম-কংগ্রেসের প্রশ্নের উত্তরে এদিনের অধিবেশনের শুরুতেই বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন প্রতিবারের মতো রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুরু হল না বিধানসভার অধিবেশন? স্পিকার জানিয়েছেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর বিধানসভার যে অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়েছিল, বুধবার সেই অধিবেশনই আবার চালু হয়। গত অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়নি৷ ফলে সংবিধানের ১৭৬ ধারা লঙ্ঘনের যে অভিযোগ উঠছে তা ভিত্তিহীন। বস্তুত এদিন রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া অর্থবিল বা বাজেট পেশের দৃষ্টান্তও ইতিহাসে রয়েছে বলে জানান তিনি। আগামী বাজেটেও যে রাজ্যপাল উপস্থিত থাকবেন না, স্পিকারের বক্তব্যে সে ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট।