‘ইন্ডিয়া’ জোটে কে লড়বে কত আসনে? আসন ছাড়া নিয়ে জটিলতা দেখা দেবে না তো?

‘ইন্ডিয়া’ জোটে কে লড়বে কত আসনে? আসন ছাড়া নিয়ে জটিলতা দেখা দেবে না তো?

নয়াদিল্লি: রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে এই মুহূর্তে অন্যতম চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট। বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘এনডিএ’ জোটকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে ‘ইন্ডিয়া’। পাটনা ও বেঙ্গালুরুর পর বিরোধীদের তৃতীয় বৈঠক হতে চলেছে মহারাষ্ট্রে। এখনও পর্যন্ত ২৬টি রাজনৈতিক দল যারা এই জোটে রয়েছে তাদের কাউকেই বেসুরো শোনাচ্ছে না। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একে অপরের হয়ে কথা বলছেন এবং পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিচ্ছেন। আর প্রত্যেকের বক্তব্যের অভিমুখ একটাই, সেটা হল প্রবল বিজেপি বিরোধিতা। তাই এ পর্যন্ত বিরোধী জোটের গতিপথ ‘ফিল গুড’ মনে হলেও বাস্তব কিন্তু সে কথা বলছে না। তার কারণ হল বিভিন্ন রাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমীকরণ। আর সেটাই চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে বিরোধী নেতৃত্বের কাছে।

পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমকে যে একটি আসনও ছাড়তে রাজি নয় তৃণমূল, তা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাবার্তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে। উল্টোদিকে কংগ্রেস হাইকমান্ড তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও কথা না বললেও রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব, বা বলা ভাল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী নিয়মিত মমতা তথা তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেই চলেছেন। একই ভাবে সিপিএম নেতৃত্ব সুর চড়াচ্ছেন মমতার বিরুদ্ধে। তাই কংগ্রেস, সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে ঐক্য কার্যত অসম্ভব, এমন প্রেক্ষাপটই লক্ষ্য করা যাচ্ছে রাজ্য রাজনীতিতে।

সেই সূত্রে কেরলে নিশ্চয়ই তৃণমূলকে আসন ছাড়তে রাজি হবে না সিপিএম এবং কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে তৃণমূল বলতেই পারে কেরলে যদি তারা আসন না পায় তাহলে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস এবং সিপিএমকে তারা আসন ছাড়তে যাবে কেন? একই ভাবে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে ক’টা আসন ছাড়বে সেই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি দিল্লি, হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবেও এই সমস্যা দেখা দেবে কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টির মধ্যে। রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনেও প্রার্থী দিতে চায় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল। সেই বিষয়টি নিয়েও সংঘাত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে  প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

এই জোট যাতে বাস্তবায়িত না হয় সেটাই বিজেপির প্রধান লক্ষ্য। তাই জোটের প্রথম বৈঠকের দিনেই বিষয়টি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির পাশাপাশি জোটকে নিশানা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা-সহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব। যদিও বিরোধীদের দাবি এই জোট নিজের মতো করে এগিয়ে যাবে এবং তা যথেষ্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বিজেপির কাছে। ‘ইন্ডিয়া’ হারিয়ে দেবে এনডিএ’কে, ধর্মতলায় একুশের সমাবেশ থেকে এমনটাই দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেটা বাস্তবায়িত করতে গেলে বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে আসন ছাড়ার ক্ষেত্রে আরও নমনীয় হতে হবে। সেটা আদৌ হবে কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 7 =