কলকাতা: তৃণমূল নেত্রী হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না মঞ্চে রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের উপস্থিতি নিয়ে এবার বিস্ফোরক প্রশ্ন তুললেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ সোমবার বিধানসভায় বাজেট পেশ হওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠক করে বাম বিধায়ক মন্তব্য করেন, ‘‘ পুলিশ কী করে ধর্না মঞ্চে থাকে? এই অফিসারদের দিয়ে কী ভাবে ভোটের কাজ হবে?’’ এই নিয়ে আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবেন বলেও জানান সুজন চক্রবর্তী৷
রবিবার রাতে সিঙ্গুরের ‘আমরণ অনশনে’র স্মৃতি উসকে ‘সংবিধান রক্ষায়’ রাজপথে ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সিঙ্গুরে জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে ৪ ডিসেম্বর ২০০৬ সালে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে বিশাল মঞ্চ বেঁধে ‘আমরণ অনশনে’ বসেছিলেন৷ সেই অনশন চলেছিল পঁচিশ দিন৷ এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসে ‘সংবিধান বাঁচাতে’ ফের কলকাতার রাজপথে ধর্নায় বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যপ্ত চলবে এই কর্মসূচি৷
West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee sitting on her ‘Save the Constitution’ dharna at Metro Channel, Kolkata. Kolkata Police Commissioner Rajeev Kumar is also present. pic.twitter.com/nB6ASQIYFp
— ANI (@ANI) February 3, 2019
রবিবার তৃণমূলের নেতামন্ত্রীদের সঙ্গে প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের পাশে বসিয়ে তৃণমূলের ব্যানারে ফের মেট্রো চ্যানেলে ধর্না শুরু করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রবিবার রাজীব কুমারের বাঙলোয় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘‘আমি এর বিহিত চাই৷ আমি সংবিধান বাঁচাতে এই ধর্নায় বসব৷’’ তৃণমূলের তরফে আগেই এই কর্মসূচির ঘোষণা করে দেন সাংসদ ডেকের ওব্রায়েন৷
রবিবার গোটা দেশকে স্তব্ধ করে সাংবিধানিক সংকট থেকে রক্ষা করার জন্য রাত থেকে ধরনায় বসে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জানিয়ে দেন, ‘‘আমি সংবিধান বাঁচাতে ধরনায় বসতে চলেছি৷ দেশে জরুরি অবস্থার থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ গব্বরি কায়দায় সব কব্জা করতে চাইছে৷ তাই এই ধরনা৷ এই ধরনা মানে সত্যাগ্রহ৷’’
রবিবার সন্ধ্যায় কোনও বৈধ নথি ছাড়াই রাজীব কুমারের বাড়িতে যায়৷ আর তার জেরেই সিবিআই আধিকারিকদের আটক করে কলকাতা পুলিশ৷ পরে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়৷ সেক্সপিয়র সরণি থানার মধ্যে সিবিআই আধিকারিকদের নিয়ে যাওয়া হয়৷ সিবিআই আধিকারিক তথাগত বর্ধনকে রাস্তা থেকে টেনে হেঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে যে আধিকারিকরা ছিলেন, তাঁদের সেক্সপিয়র সরণি থানার তুলে নিয়ে আনা হয়৷ পার্কস্ট্রিট থানা থেকেও সিবিআই আধিকারিকদেরও সেক্সপিয়র সরণি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ সিবিআই আধিকারিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না তা পুলিশের তরফে জানানো হয়নি৷ কেন তাঁদের রাস্তা থেকে টেনে হেঁচড়ে কেন পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হল, তাও পুলিশের তরফে জানানো হয়নি৷ এদিনের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির খবর পেয়ে রাজীব কুমারের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী৷ এডিজি আইনশৃঙ্খলা রাজীব কুমারের বাড়িতে যান৷ পৌঁছান মেয়র ফিরহাদ হাকিম৷ সেখান থেকেই বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা৷ সংবিধান বাঁচাতে ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করেন তিনি৷