কলকাতা: বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর সফর ছিল ঘটনাবহুল৷ কলকাতা শহরে পা দেওয়ার আগে থেকেই কলকাতার বিভিন্ন মিছিলে গো ব্যাগ মোদি স্লোগান উঠতে থাকে৷ বিক্ষোভের মুখে যাতে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি কোনওভাবে ব্যাহত না হয়, সেই কারণে আগে থেকেই নিরাপত্তা রক্ষীরা সমস্ত ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন৷ শনিবার সেই বিক্ষোভ এড়িয়ে সারাদিন নানা কর্মসূচির মধ্যে ব্যস্ত ছিলেন তিনি৷ রাতে তিনি বেলুড়মঠে যান৷
১. কলকাতাতে পা দেওয়ার আগে থেকে মোদির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয় বিভিন্ন জায়গায়৷ নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরোধিতা করে বিক্ষোভ শুরু হয়৷ কালো পতাকা ও ক্যালো ব্যাচ পড়ে অনেক জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় পড়ুয়া থেকে সাধারণ নাগরিকদের৷
২. বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ বিজেপি রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় সহ প্রমুখরা৷
৩. রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ২০ মিনিট বৈঠক করেন৷ বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দ্রের কাছ থেকে অনেক টাকা রাজ্য সরকার পায়৷ সেই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন৷ তিনি মোদিকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সিএএ তিনি মানবেন৷ এই বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মোদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে ডাকেন৷
৪. এরপর রাজ্য বিজেপির সদস্যদের সঙ্গে রাজভবনে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী৷ সেখানে রাজ্য বিজেপির সদস্যরা জানান, বর্তমানে বাংলার পরিস্থিতি কি৷ কীভাবে বাংলায় এই পরিস্থিতির উন্নতি করা যায়৷ বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেন বলে জানা গিয়েছে৷
৫. রাজভবন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলে যান তৃণমূলের ধর্ণা মঞ্চে৷ সেখানে গিয়ে তিনি পুনরায় সিএএ বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন৷ তিনি জানান, প্রশাসনিক প্রটোকল বজায় রাখতেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন৷ তিনি সিএএ ও এনআরসি বিরোধী ছিলেন ও থাকবেন৷
৬. শনিবার সন্ধ্যায় ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিংয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ আগামী প্রজন্মকে অবহিত করার জন্য ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও নিদর্শন সংরক্ষণ এবং আধুনিকীরণের ওপর জোর দেন৷
৭. কারেন্সি ব্লিডিং থেকে থেকে মিলিয়ন পার্কে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ হাওড়া ব্রিজে লাইট অ্যান্ড সাউন্ট সিস্টেমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মিলিনিয়ন পার্ক থেকে জলপথেই বেলুড়মঠের দিকে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
৮. মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের পৌঁছে যান তৃণমূলের ধর্ণা মঞ্চে৷ সেখান থেকেই তিনি ডেরিনা ক্রশিংয়ে ছাত্রদের শান্ত থাকার আহ্বান করেন৷ কিন্তু ছাত্ররা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ধর্ণা মঞ্চের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন৷
৯. বেলুড়মঠে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী অধ্যক্ষ শরণানন্দ মহারাজের সঙ্গে দেখা করেন৷ বেলুড় মঠেই রাত্রি যাপন করেন তিনি৷ সেখানকারই ভোগ প্রসাদ খান৷ পাশাপাশি সন্ন্যাসীদের সঙ্গে তাঁর ধ্যানে বসেন তিনি৷
১০. রবিবার সকালে স্বামীজির ঘরে যান তিনি৷ স্বামীজিকে শ্রদ্ধা জানান তিনি৷ এরপর বেলুড় মঠ থেকেই বক্তব্য রাখেন তিনি৷ সেখানে তিনি ভারতের যুব সমাজকে অন্ধকারে রাখার কথা বলেন তিনি৷ তিনি বেলুড় মঠ থেকেই সিএএ ও এনআরসির প্রচার করেন৷
১১. নেতাজি ইন্ডোরে পোর্ট ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে যোগদান করেন৷কলকাতা বন্দরের দেড়শো বছর উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ সেখানেই তিনি কলকাতা বন্দরের নাম বদল করেন৷শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে নামকরণ করা হয় কলকাতা বন্দরের৷