প্রলয় শেষপর্যন্ত বিজেপিতে থেকে গেলেও কতটা স্বস্তিতে রয়েছেন শুভেন্দুরা?

প্রলয় শেষপর্যন্ত বিজেপিতে থেকে গেলেও কতটা স্বস্তিতে রয়েছেন শুভেন্দুরা?

comfortable

নিজস্ব প্রতিনিধি: নন্দীগ্রাম বা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা রাজনীতিতে ‘প্রলয়’ শেষ পর্যন্ত ঘটেনি। কারণ মানভঞ্জনের পর বিজেপিতেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নন্দীগ্রামের নেতা প্রলয় পাল। সম্প্রতি প্রলয় ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টে লিখেছিলেন,”ভাল থেকো রাজনীতি। আর নয়, দাও বিদায়!” জানা যায় গত বৃহস্পতিবার বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলায় যে নতুন জেলা কমিটি গঠন করা হয় তাতে একাধিক পদাধিকারীর থাকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রলয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে  চেয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করে, রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাওয়া নয়। তাঁর তৃণমূলে যাওয়া কার্যত সময়ের অপেক্ষা ছিল। সেই জায়গা থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ অন্যান্য জেলা নেতৃত্ব প্রলয়ের মানভঞ্জন করেছেন। আর তাতেই আপাতত প্রলয় নিজের নেওয়া সিদ্ধান্ত বদল করেছেন।

 

কিন্তু এভাবে আর কতদিন? বাম-কংগ্রেস-বিজেপির নীচুতলায় এখনও বহু নেতাকর্মী রয়েছেন যাদের যথেষ্ট সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে। প্রয়োজনে তাঁদের টার্গেট করতে পারে তৃণমূল, এমন প্রেক্ষাপট অত্যন্ত স্পষ্ট। সেই জায়গা থেকে নন্দীগ্রামের প্রলয় পালের যথেষ্ট সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে বলে সকলেই মনে করেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন প্রলয়। সেই নির্বাচনে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে ছিলেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। সেই নির্বাচনের কিছুদিন আগে একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছিল। (যদিও সেই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি ‘আজ বিকেল’)।

 

সেই অডিও ক্লিপে শোনা গিয়েছিল নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাহায্য চাইছেন প্রলয় পালের। এরপর নন্দীগ্রামে জয়লাভ করেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর সেই জয়ে প্রলয়ের যথেষ্ট ভূমিকা ছিল বলে নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতৃত্ব মনে করেন। এরপরই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন প্রলয়। এই পরিস্থিতিতে যেভাবে রাজনীতি থেকে সরে আসার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি, তাতে অনেকেই অবাক হয়ে যান। যদিও প্রলয় দু’দিনের মধ্যেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, সবার অনুরোধেই বিজেপিতে থেকেই কাজ করে যেতে চান তিনি। প্রলয়ের মানভঞ্জন করতে মূল উদ্যোগ নিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে এরপরেও প্রশ্ন উঠছে। শাসক দলের একাংশের সঙ্গে প্রলয়ের যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি তো? এখন প্রলয়কে ধরে রাখা গেলেও আগামী দিনে অন্য কিছু ঘটবে না তো? শুধু তাই নয়, নীচুতলার সাংগঠনিক নেতা-নেত্রীরা যদি বসে যান সেক্ষেত্রে লোকসভা নির্বাচনের আগে যথেষ্ট সমস্যায় পড়বে বিজেপি। কারণ তাঁদের রিপোর্ট দেখেই সংশ্লিষ্ট বুথ কমিটিগুলিতে দলের অবস্থা কেমন রয়েছে তা বুঝতে পারেন রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই জায়গা থেকে বিরোধী দলের নীচুতলার সাংগঠনিক নেতা-নেত্রীদের তৃণমূল টার্গেট করতে পারে বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করেন। তাই প্রলয়ের মতো নেতাদের বিজেপি কতদিন ধরে রাখতে পারবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × three =