নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বঙ্গ বিজেপিকে সুবিধা দিতে পারে, কীভাবে?

তিয়াষা গুপ্ত: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল মঙ্গলবার লোকসভায় পাশ হয়েছে। বুধবার মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, দেশকে যাঁরা ভালোবাসেন, সেই সব ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন। এর বিল নিয়ে অসমে তুমুল অশান্তি শুরু হয়ে যায়। পরে আসরে নামতে হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে। তিনি রাজ্যসভায় বলেন, এই বিল আইন হলে উত্তর পূর্বের মানুষের সংস্কৃতি ও

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বঙ্গ বিজেপিকে সুবিধা দিতে পারে, কীভাবে?

তিয়াষা গুপ্ত: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল মঙ্গলবার লোকসভায় পাশ হয়েছে। বুধবার মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, দেশকে যাঁরা ভালোবাসেন, সেই সব ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন। এর বিল নিয়ে অসমে তুমুল অশান্তি শুরু হয়ে যায়। পরে আসরে নামতে হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে। তিনি রাজ্যসভায় বলেন, এই বিল আইন হলে উত্তর পূর্বের মানুষের সংস্কৃতি ও পরিচিতি সংরক্ষণ করা হবে। কিন্তু এই নিয়ে বিতর্ক থামেনি। এদিকে রাজনৈতিক বিশষজ্ঞরা বলছেন, এই বিল আইন হলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ফায়দা তুলতে পারবে। কীভাবে?

এই বিল নিয়ে উত্তর পূর্বে বিজেপির বেশ ল্যাজে গোবরে অবস্থা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তারা হালে পানি পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিল কার্যকর হলে ১০ মিলিয়ন হিন্দু বাংলাদেশি উদ্বাস্তু তাদের অনুকূলে আসবে। অসমে জাতীয় নাগরিক খসড়া প্রকাশের পরেও পশ্চমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেড়েফুঁড়ে উঠেছিলেন। তাঁর কথায়, অসম থেকে বাঙালি হটাও অভিযান শুরু হল। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

ফলে এই খসড়া সামনে আসার পর যেভাবে বিজেপির বাঙালি বিরোধী ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল, তার ড্যামেজ কন্ট্রোল সম্ভব।
বিজেপির উদ্বাস্তু সেলের অধ্যাপক মোহিত রায় বলেন, এর মধ্য়েই কাজ নিয়ে কাজ করছেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁর কথায়, খুব সহজ পূরণ করতে হবে। কোনো নথি দাখিল করতে হবে না। কারণ আমরা জানি, দেশ ছেড়ে আসার সময় অনেকেই হয়ত কোনো প্রামাণ্য নথি আনতে পারেননি। এনআরসি-র মতো এটা কোনো জটিল প্রক্রিয়া নয়। নাগরিক সংশোধনী আইন কার্যকর হয়ে গেলে এনআরসি-র আর প্রয়োজন হবে না। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, এটা বড় পদক্ষেপ। আমরা এই নিয়ে প্রচারে নামব। মোদী একে হাতিয়ার করে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। তিনি অসমে গিয়ে এই বিল মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।

বিল বিতর্ক: বিল লোকসভায় পেশ হতেই অসমে ছাত্র, রাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ শুরু করেন। কালা দিবস পালন করা হয়। বিতর্কের কারণ, তাঁদের অভিযোগ, এই আইন লাগু হলে ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার সিটিজেন ও অসম অ্যাকর্ডের সঙ্গে এর বিরোধ তৈরি হবে। মানুষ অসুবিধায় পড়বেন।  সম্প্রতি অসমে এনআরসি নিয়েও তুমুল হট্টগোল শুরু হয়।

এনআরসি ও বিতর্ক: ৩০ জুলাই, ২০১৮- অসমের চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জীকরণ খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এই খসড়া প্রকাশের ফলে ৪০লাখ মানুষ ভারতীয় নাগরিকত্ব হারানোর পথে। এনআরসির অংশ হওয়ার দাবি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন, ৩.২৯ কোটি মানুষ। খসড়ায় রয়েছে ২.৮৯ কোটির নাম। এর অর্থ প্রায় ৪০ থেকে ৪১ লাখ অসমীয়া আর ভারতীয় নন। এই নিয়ে অসমে অশান্তির ঝড় বয়ে গেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, এর ফলে অসম থেকে বাঙালি খেঁদানো হবে। ফলে এই প্রক্রিয়া রুখে দিতে গর্জে ওঠেন তিনি। অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও এই নিয়ে সরব। এর ওপরে আবার নাগরিক বিল নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিল। এই নিয়ে মোদী ও তাঁর বাহিনী আসরে নামছেন, দেখা য়াক কী হয়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + eight =