সৎ মায়ের অত্যাচার, পিঠে বই-খাতা নিয়ে ঘরছাড়া মা-হারা মেধাবী পড়ুয়া!

সৎ মায়ের অত্যাচার, পিঠে বই-খাতা নিয়ে ঘরছাড়া মা-হারা মেধাবী পড়ুয়া!

কৃষ্ণনগর: শৈশবেই সরে গেছে মায়ের স্নেহের আঁচল। মায়ের ভালোবাসা বুঝে ওঠার আগেই সেই স্পর্শ হারিয়েও গেছে জীবন থেকে। তারপর থেকে বাবাকে আঁকড়ে বড় হয়ে ওঠা দীপশঙ্করের পরিবারে আসে আরেক মা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই সৎ মা ‘মা’ হয়ে উঠতে পারেনি।

দু-বছর বয়সে মাতৃহারা হওয়ার পর থেকেই সম্পূর্ণ পাল্টে যায় জীবন। এই কটা বছরে জীবন যেন এক কঠিন অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বছর পনেরোর দীপশঙ্করের কাছে। শান্তিপুর রেল স্টেশনে তাকে দীর্ঘ সময় ধরে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখেই সন্দেহ হয় জিআরপির। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই  সামনে আসে হতভাগ্য এক কিশোরের কাহিনী।

বাবা কমল পাল দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকেই  ছোট্ট দীপশঙ্করের উপর অত্যাচার শুরু করেন। একটা সময়ে সেই অত্যাছারের মাত্রা বাড়তে থাকে।বাধ্য হয়ে ব্যারাকপুরে বাবার বাড়ি ছেড়ে নদীয়ার শান্তিপুরে মামাবাড়ি চলে আসে দীপশঙ্কর।

এরপর থেকে শান্তিপুরের  খাঁ পাড়ায় মামার বাড়িতে থাকতে শুরু করে দীপশঙ্কর। মা নেই, তাই মামারবাড়ির সেই আদরও বেশি দিন টেকেনি। মামাদের অত্যাচারে আবারও বাবার বাড়িতে চলে যায় অভাগা কিশোর। শুক্রবার প্রশ্নপত্র নিতে মামাবাড়িতে এলে সেখান থেকেও মেলে ঘারধাক্কা।

গত দুবছর ধরে মামার বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা চালাচ্ছিল দীপশঙ্কর পাল। শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সে। মামাবাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় রাত কাটানোর তাগিদে ঘুরে বেড়ায় শান্তিপুরের এদিক-ওদিক। সন্ধ্যা নামার পর আশ্রয় নেয় শান্তিপুর রেলস্টেশনে , তখনই শান্তিপুর রেল পুলিশের নজরে পড়ে। দীপশঙ্করের কাছে সমস্ত ঘটনা জানার পরে জিআরপি তরফে শান্তিপুর থানার সাথে যোগাযোগ করা হয়।  পুলিশ সূত্রে খবর, আপাতত হোমে রাখা হবে ওই কিশোরকে। অমানবিক এই  ঘটনার কথা জানাজানি হতেই হতভম্ব গোটা শান্তিপুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *