সাহিত্য মারানো? খুন করে দেব! প্রাণের ভয়ে ঘর-ছাড়া অকাদেমি পুরস্কার পাওয়া সাহিত্যিক

কলকাতা: সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পাওয়াটা চাট্টিখানি কথা নয়, এমনই এক সাহিত্যিককে আজ প্রাণের দায়ে বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করে থাকতে হচ্ছে। সাহিত্যিকের নাম মবিনুল। বছর ৬৩-র মবিনুল দা মুৎ্শিদাবাদের ইসলামপুর থানার রানিগ্রামের বাসিন্দা। তাঁর প্রতিবেশীরা দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি জমি দখল করে নির্মাণ শুরু করে একটা সময় সেই নির্মাণকার্য মবিনুলবাবুর জমিতে চলে এলে তিনি প্রতিবাদ করেন। বৃদ্ধ

সাহিত্য মারানো? খুন করে দেব! প্রাণের ভয়ে ঘর-ছাড়া অকাদেমি পুরস্কার পাওয়া সাহিত্যিক

কলকাতা: সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পাওয়াটা চাট্টিখানি কথা নয়, এমনই এক সাহিত্যিককে আজ প্রাণের দায়ে বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করে থাকতে হচ্ছে। সাহিত্যিকের নাম মবিনুল। বছর ৬৩-র মবিনুল দা মুৎ্শিদাবাদের ইসলামপুর থানার রানিগ্রামের বাসিন্দা। তাঁর প্রতিবেশীরা দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি জমি দখল করে নির্মাণ শুরু করে একটা সময় সেই নির্মাণকার্য মবিনুলবাবুর জমিতে চলে এলে তিনি প্রতিবাদ করেন। বৃদ্ধ মবিনুল হক শক্তিশালী প্রতিবেশীদের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারবেন না প্রথমেই বুঝেছিলেন। তাই সোজাসুজি কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। হাইকোর্ট সাহিত্যিকের আবেদন বিবেচনা করে তদন্তের নির্দেশ দিলে দেখা যায় অভিযোগ সত্যি।

সাহিত্য মারানো? খুন করে দেব! প্রাণের ভয়ে ঘর-ছাড়া অকাদেমি পুরস্কার পাওয়া সাহিত্যিকএরপরই আদালতের নির্দেশে বেআইনি নির্মাণ বেঙে দেয় পুলিশ। কিন্তু তারপর থেকেই প্রতিবেশীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বাড়ি বসে এসে সাহিত্যিককে হুমকি দিয়ে যায়, সম্প্রতি কিছু ব্যক্তিগত কাজে এলাকার বাইরে ছিলেন মবিনুল হক, বাড়ি ফেরার সময় প্রতিবেশীরা তাঁর পথ আটকায়, সাফ জানায় মামলা তুলে না নিলে পরিবার-সহ সাহিত্যিককে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। একই সঙ্গে তাঁর বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। এরপর থেকেই পরিবার নিয়ে বাড়ি ছাড়া সাহিত্যিক, বিভিন্ন সময় আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে থাকছেন, জানাজানি হওয়ার ভয়ে রাতারাতি অন্য কোথাও চলে যাচ্ছেন। একান্ত বাধ্য হয়েই গোটা ঘটনা পরিস্থিতি জানিয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিব, জেলার পুলিশ সুপার, জেলা শাসকের কাছে আবেদনও করেছেন তিনি। পুলিশ সুপার তাঁকে ইসলামপুর থানায় গিয়ে কথা বলতে বলেছেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে থানায় যেতে পারেননি সাহিত্যিক।যেকোনও দিন খুন হয়ে যাতে পারেন, এই আতঙ্কে প্রহর গুনছেন তিনি।

এদিকে বিশিষ্ট সাহিত্যিের এহেন পরিস্থিতি দেখে সরব মুর্শিদাবাদের সুশীল সমাজ। শিক্ষক, অধ্যাপক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক মঞ্চের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো পোস্ট কর চলছে প্রচার। একটাই দাবি অকদেমি পুরস্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক মবিনুল হককে এসব সমস্যা থেকে রেহাই দেওয়া হোক। তাঁর ও পরিবারের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক পুলিশ। সাহিত্যিকের দাবি, রানিনগর একেবারেই প্রত্যন্ত এলাকা, তাঁর প্রতিবেসীরা সাহিত্য শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে ততটাও ভাবিত নয় যতটা ধর্ম তাদের ভাবায়। তায় পুরস্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক যে এক অলঙ্কার বা গর্বের বিষয় এসব বোঝা সাধ্যের অতীত ব্যাপার। তাই নিরাপত্তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় আচেন মবিনুল হক।

২০১৮-র সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার তিনিই পেতে চলেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে তাঁকে এই সম্মানে ভূষিত করা হবে। পুরস্কার স্বরূপ মবিনুল হকের হাতে তুলে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা ও তাম্র পত্র। তবে তার আগে সাহিত্যিকের নিজের জন্মভিটেতে ফেরা সুনিশ্চিত করুক এটাই চাইছেন শুভাকাঙ্খীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − nine =