চাঁচল: কোনও মন্দির নয়! উঁচু ঢিপির উপরই প্রতিষ্ঠিত দেবদেবীদের ছবি! গ্রামের এককোণে খোলা আকাশের নীচে রয়েছে দেবীর বেদি। কোনো রাজা প্রজার নয়,তৎকালীন সময়ে গ্রামের মোড়ল এই পূজোর প্রচলন ঘটায়।
সেটা প্রায় দেড়শ বছর আগের কথা। আজও সেই বেদীতে দক্ষিণা কালীর মূর্তি তুলে পুজো করে আসছেন গ্রামের দশটি ঘর।পুজোতে জাকজমক না থাকলেও রয়েছে ধর্মীয় রীতি। দীপান্বিতা অমবস্যায় শক্তিদায়িনীর আরাধনায় মেতে ওঠেন গ্রামের প্রমীলারা।
মালদহের চাঁচল থানার কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের তেলেনপুকুর-হাড়িপাড়ার এই পূজোর প্রস্তুতি তেমন কিছু নেই। নেই আলোক সজ্জা, নেই প্যান্ডেলের ঝকমারি, নেই কোনও থিম। শতাব্দি প্রাচীন পুজোর ভার নিয়েছেন গ্রামের মহিলারাই। সেই দশটি পরিবারের গ্রামে কেউ ই-রিক্সা চালায়, কেউ বা পরিযায়ী শ্রমিক৷ কেউ পরিচারিকার কাজ করেন।
তবে অর্থাভাব থাকলেও মায়ের পুজোয় কোনও কার্পণ্য করেন না তাঁরা৷ সারাবছর একটু একটু করে জমানো অর্থ দিয়ে পূজোর জোগান করেন তাঁরা। এইভাবেই দশকের পর দশক ধরে মা দক্ষিণা কালীর আরাধনায় সামিল এই দশটি পরিবারের গ্রাম। তবে করোনার পরে তাদের রূজি রোজগারে টান পড়ায় বাজেট এবার যৎসামান্য। স্বল্প আয়োজনে পুজো সারছেন তাঁরা।
এখানে বেদীর চারপাশ ফাঁকা, নেই ছাদ। সেখানেই ত্রিপল খাটিয়ে দক্ষিণা কালীর আরাধনা হয়৷ কালী মা থাকাকালীন যেন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হয়, সেই প্রার্থনা করেন গ্রামবাসীরা। তবে উত্তরবঙ্গে এবার কালীপুজোয় সেই রকম ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। তাই স্বস্তিতে রয়েছে উদ্যোক্তারা। এক সময় এখানে পশুবলির প্রচলন থাকলেও এখন তা বন্ধ।