কৃষ্ণনগর: করোনা আতঙ্কে এখন একই বাড়ির সদস্যরাও যেন একে অপরের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। শুনতে অবাক লাগলেও পরিস্থিতি এমনই। আর কেউ কোনো কাজে বাইরে বেরোলে তো কোনো কথাই নেই। ঘরে না ফেরা পর্যন্ত একরকম উৎকণ্ঠা আবার ঘরে ফিরে এলে তাঁকে কতভাবে কত তাড়াতাড়ি স্যানিটাইজ করা যায় তা নিয়ে আরও বেশি উৎকণ্ঠা। এখন আশেপাশের কেউ অসুস্থ হলেই এলাকা জুড়ে নিমেষের মধ্যে সেই খবর গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। সচেতনতার ঠেলায় পাশের বাড়ির অসুস্থ প্রতিবেশীর কথা কেউ কেউ থানায় ফোন করেও জানাচ্ছেন।
লকডাউনে ঘরবন্দী মানুষ এমনই নানান সচেতনতা মূলক কর্মসূচি পালন করছেন নিজের মতন করে। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে ভিন দেশ বা ভিন রাজ্য ফেরত মানুষদের নিয়ে। এক্ষেত্রে শহর থেকে গ্রামের চিত্রটা প্রয় একই রকম। সুস্থ শরীরে বাড়িতে ফিরলেও বাধ্যতামূলকভাবে তাদের বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে আবার হাসপাতালেও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। দিন কয়েক আগে পুরুলিয়ায় ভিন রাজ্য ফেরত সাতজন যুবক বাড়িতে আলাদা থাকার জায়গা না থাকায় গাছেই মাচা বানিয়ে আইশোলেশনে ছিলেন। তবে ভিন জেলা থেকে আত্মীয়ের বেড়াতে গিয়ে অভিনব কোয়ারেন্টাইনে কাটাতে হচ্ছে এক বৃদ্ধকে।
নাওয়া, খাওয়া রাত্রিযাপন সবটাই চলছে নদীর তীরে বাঁধা নৌকায় থেকে। নবদ্বীপের পাবনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা কীর্তনিয়া নিরঞ্জন হালদার গেছিলেন মালদার হবিবপুরের বুলবুলচন্ডীতে নিজের ভাগ্নির বাড়িতে। তবে গ্রামে পা রাখা মাত্রই গ্রামবাসীদের দাবি মতো স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হয় নিরাঞ্জন বাবুকে। কারণ তিনি ভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা তাঁকে হোম কোয়রান্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু সমস্যা হল ভাগ্নির বাড়িতে বাড়তি ঘর নেই। কিন্তু ওই গ্রামের অন্য কোনো বাড়িতেও ঠাঁই হয়নি ওই বৃদ্ধের। তাই অগত্যা নৌকায় থাকতে শুরু করেন তিনি। যদিও নিয়মিত ভাগ্নির বাড়ি থেকেই আসছে খাবার।
WB: An elderly man from Nabadwip in Nadia Dist has quarantined himself on a river boat, says, “I had fever after visit to a relative's place in Habibpur. Villagers here didn't allow me to enter the village. On doctor's advice to quarantine for 14days, I took shelter on the boat” pic.twitter.com/NTHH3jxNzD
— ANI (@ANI) April 2, 2020
খবর পেয়ে এগিয়ে এসেছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তারাও খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন ওই বৃদ্ধকে। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, এলাকার বিডিও বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এইধরণের নানান সমস্যার সম্মুখীন যারা তাদের জন্য ওই অঞ্চলের বিভিন্ন স্কুলে হোম কোয়রান্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে নেওয়া হচ্ছে। এই বৃদ্ধকেও সেখানেই স্থানান্তরিত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।