আনিসুরের বিরুদ্ধে মামলা তুলতে হাইকোর্টে মুখ পোড়াল রাজ্য

আনিসুরের বিরুদ্ধে মামলা তুলতে হাইকোর্টে মুখ পোড়াল রাজ্য

কলকাতা: পাঁশকুড়ায় তৃণমূল নেতা কুরবান আলি শাহ খুনের ঘটনায় জেলবন্দি আনিসুর রহমানের মামলা  প্রত্যাহারের আবেদন খারিজ৷ তমলুক আদালতের নির্দেশ খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট৷ ইতিমধ্যে তাকে ছেড়ে দেওয়া হলে ফের গ্রেফতার করতে হবে বলে আদালতের নির্দেশ৷ কেন রাজ্য সরকারের তরফে এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করা হল, তা স্পষ্ট নয় বলেও উল্লখ করেছেন বিচারপতি৷ ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না৷ এদিকে, হাইকোর্টের নির্দেশ আসার আগেই অনিসুরকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর৷ 

আরও পড়ুন-  মোদী-শাহ মিলে করতে পারেন ৭০ সভা! পাখির চোখ ‘সোনার’ বাংলা

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে খুন হন পাঁশকুড়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি কুরবান শাহ। এই মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা আনিসুরের নাম। খুন হন তৃণমূল নেতা কুরবান আলি শাহ৷ এই মামলায় গ্রেফতার করা হয় আনিসুর রহমানকে৷ তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়৷ চার্জশিটও জমা দেয় পুলিশ৷ ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিকবার জামিনের জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু বারবার তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেছে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু হঠাৎ করেই গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকারের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়৷ সেখানে বলা হয়, নিম্ন আদালতের সরকারি আইনজীবী বিচারকের কাছে আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে খুন সহ একাধিক ধারায় যে মামলা রয়েছে, সেই মামলা প্রত্যাহার আর্জি জানাবেন৷ সেই মর্মে সরকারি আইনজীবী তমলুক আদালতের বিচারকের কাছে রাজ্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বিচারপতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এর পর আজ সকালে নিহত তৃণমূল নেতা কুরবান শাহের পরিবারের সদস্যরা কলকাতা হাইকোর্টে আসেন৷ তাঁরা জানান, সরকারের নির্দেশিকা তাঁরা মানবেন না৷ এর বিরোধিতা করছেন৷ সরকারি আইনজীবীদের আবেদনের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতে ইতিমধ্যেই আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে৷ এখন কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলা চলছিল৷ এদিন আদালত জানায়, আনিসুরের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল, সেই নির্দেশিকা খারিজ করা হল৷  আদালত আরও জানায়, একজন সরকারি আইনজীবী ডাকবাক্সের মতো আচরণ করবে তা হতে পারে না৷ সরকারি আইনজীবীকে বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রেখে আইনের পথে চলতে হবে৷ ডাকবাক্সের মতো আচরণ কখনই গ্রহণযোগ্য নয়৷ মামলা প্রত্যাহার করতে চাইলে কারণ স্পষ্ট করতে হবে৷ 

আরও পড়ুন- ‘রাজ্যে লাভ জিহাদ রুখতে ব্যর্থ তৃণমূল সরকার, চলছে অবৈধ গরু পাচার’,হুঙ্কার যোগীর

হাইকোর্ট জানায়, এই পরিস্থিতিতে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না৷ রাজ্য মামলা প্রত্যাহার করতেই পারে৷ তবে তার জন্য নির্দিষ্ট কারণ থাকতে হবে৷ ইচ্ছে মতো এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না৷ আগে জামিনের বিরোধিতা করেছিল রাজ্য৷ পরে হঠাৎ কেন মামলা প্রত্যাহারের আর্জি? তা স্পষ্ট করতে হবে৷ 

রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে  মঙ্গলবার দুপুর দুটোর সময় হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন কুরবানশার ভাগ্না জহর শা।  তাঁর আইনজীবী জানান, এইরকম একটা ঘৃণ্য কাজ যিনি করেছেন তার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করার অর্থ দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারানো৷ এর পরেই বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেন৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 + nine =