বিশ্বভারতীয় অচলাবস্থা কাটাতে পুলিশি হস্তক্ষেপের নির্দেশ হাইকোর্টের

বিশ্বভারতীয় অচলাবস্থা কাটাতে পুলিশি হস্তক্ষেপের নির্দেশ হাইকোর্টের

কলকাতা: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে কড়া পদক্ষেপ কলকাতা হাইকোর্টের৷ অচলাবস্থা কাটাতে পুলিশি হস্তক্ষেপে নির্দেশ দেওয়া হল৷ দুপুর ৩ টের মধ্যে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির সামনে থেকে বিক্ষোভকারীদের হঠানোর নির্দেশ দেওয়া হল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশকে৷ খুলে দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগানো সমস্ত ব্যানার-ফেস্টুন৷ সেইসঙ্গে বলা হয়েছে, উপাচার্যকে কোনও ভাবেই হেনস্থা করা যাবে না বা তার গতিবিধি আটকানো যাবে না৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ মিটারের মধ্যে কোনও বিক্ষোভ করা যাবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়েছে আদালত।

আরও পড়ুন- BREAKING: প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের সভাপতিকে আর্থিক জরিমানা করল হাইকোর্ট

শুক্রবার উপাচার্যের আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানান, কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়ী সমিতি মিলিত ভাবে বিশ্বভারতীর পরিস্থিতিতে উস্কানি দিচ্ছে। গত ২৮ আগস্ট থেকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে৷ একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ (ঐক্য মঞ্চ কমিটি) এই বিক্ষোভ চালাচ্ছিল৷ এরই মাঝে ঐশী ঘোষ এবং বাদশা মৈত্র সেখানে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানা৷ এর থেকেই স্পষ্ট যে বিশ্বভারতীর অচল অবস্থার পেছনে বহিরাগতদের মদত রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ৷ আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভকারীরা তালা ঝুলিয়ে রেখেছে৷ ফলে বিশ্বভারতীর স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। ভর্তি প্রক্রিয়া স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। বিশ্বভারতীর ভেতরে যে সমস্ত সিসি ক্যামেরা  রয়েছে সেগুলোও অকেজো করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান আইনজীবী। শুধু তাই নয়, ইন্টারনেট পরিষেবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শান্তিনিকেতন থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের করা হলেও শান্তিনিকেতন থানায় পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই অভিযোগ৷ 

এর প্রেক্ষিতে এদিন আদালত জানায়, দুপুর ৩টে থেকে প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসস্থান-সহ যেখানে যেখানে আন্দোলনকারীরা তালা ঝুলিয়েছে, সেই সমস্ত তালা শান্তিনিকেতন থানার পুলিশকে ভেঙে ফেলতে হবে৷ এছাড়াও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনও রকম মাইকের ব্যবহার করা যাবে না। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কোনও কর্মীকে ঢুকতে বাধা দেওয়া যাবে না৷ সিসি ক্যামেরা সচল রাখতে হবে৷ 

এদিকে, সরকার পক্ষের আইনজীবী অমিতেশ বন্দোপাধ্যায় আদালতে জানান, বিশ্বভারতী আদালতে যে বক্তব্য রাখছেন তার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। প্রশাসনিক ভবনে যাঁরা তালা ঝুলিয়েছে তাঁরা বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষী। আন্দোলনকারীরা নয়৷ কিন্তু কী ভাবে একজন উপাচার্যকে এভাবে গৃহবন্দি করে রাখা হল? প্রশ্ন করেন বিচারপতি৷ আদালত আরও জানতে চায়, তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে সরকার কি কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে? জবাবে সরকারি আইনজীবী জানান, বৃহস্পতিবার তিনি অসুস্থ হওয়ার পর এসডিও একটি চিকিৎসক দল নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন৷ কিন্তু উপাচার্য এবং তাঁর পরিবারের কেউই তাতে কোনও সাড়া দেয়নি। 

আরও পড়ুন- খাবার নষ্ট করায় নির্মম শাস্তি! ৩ বছরের শিশুর সারা গায়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিল মা

এদিকে, ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষের আইনজীবী শামীম আহমেদ বলেন, উপাচার্যের ব্যবহার নিয়ে এর আগেও কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। বেআইনিভাবে ছাত্রদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷ কিন্তু এর জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে, কেন পড়ুয়ারা আইন নিজের হাতে তুলে নিলেন? প্রশ্ন বিচারকের৷ শামীম আহমেদ আদালতে জানান, বিক্ষোভ গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে৷ তবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভুল৷ কোনোভাবেই বিশ্বভারতীর উপাচার্যের চিকিৎসায় কোনও বাধা দেননি ছাত্রছাত্রীরা। 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 4 =