কলকাতা: কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন অন্যতম অভিযুক্ত অজিত মাঝি ওরফে লালা। সেই মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখলেন বিচারপতির সভ্যসাচি ভট্টাচার্য্য। আগামি সপ্তাহে রায় দানের সম্ভাবনা রয়েছে। লালার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের তদন্ত করার এক্তিয়ার নেই বলেই দাবি করেছিলেন তাঁর আইনজীবী ফারুক রাজ্জাক। সেই মামলারই এদিন শুনানি ছিল। ‘কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই এফআইআর অদ্ভুত। রেলওয়ে এলাকার বাইরে গেলেই তদন্ত অনুমতিহীন! কেউ ছুটে রেলওয়ে এলাকার বাইরে গেলেই সিবিআই তদন্তের এক্তিয়ার নেই। এটা ঠিক রেলওয়ে এলাকার মধ্যে এফআইআর করতে পারে সিবিআই। পিকিউলিয়ার কেস এটা’। কয়লাপাচার কাণ্ডে সিবিআই এফআইআর চ্যালেঞ্জ মামলায় মন্তব্য বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের। এদিকে, আদালতে সিবিআইয়ের অভিযোগ, মামলা খারিজের জন্য লালার থেকে বেশি আগ্রহী রাজ্য। তবে, রাজ্যের দাবি, ২০১৮ সালে সিবিআই তদন্তের জন্য রাজ্য তার সম্মতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তাই ২০১৮ সালের পর নতুন মামলা দায়ের ও তদন্তের ক্ষেত্রের রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন।
কয়লা পাচার কাণ্ডে একাধিকবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের তলবের পরেও হাজিরা দেননি মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা। এদিকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগেই তার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন লালা। তার আইনজীবী দাবি করেছিল, শুধুমাত্র অপরাধমূলক কাজ কর্মের যুক্ত বলে মনে হবার জন্য এইভাবে কারো বিরুদ্ধে তদন্ত করা যায় না। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের সম্মতির প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে সেই সম্মতি নেওয়া হয়নি। এর পাল্টা সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছিল, রেলের এলাকায় যদি কোনরকম অপরাধমূলক কাজকর্ম হয়ে থাকে তাহলে কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী তার তদন্ত করতেই পারে সিবিআই।
কয়লা পাচার কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই এক জনসভা থেকে লালার নাম নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। প্রশ্ন তোলেন, ‘লালার টাকা কার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে?’ এদিন থাইল্যান্ডের একটি ব্যাংকের ডিটেল দিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, ওই অ্যাকাউন্টে প্রত্যেক মাসে ৩৬ লক্ষ টাকা করে ঢুকেছে। আর ওই অ্যাকাউন্ট ম্যাডাম নারেলার নামে রয়েছে দাবি শুভেন্দুর। শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের পর কয়লা পাচার কাণ্ড নিয়ে আরো বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এ রাজ্যে। নব্য বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বক্তব্যে নাম না করে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতৃত্বকেই। ধীরে ধীরে আরও তথ্য তিনি সকলের সামনে আনবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সবমিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বেশ চাপে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।