কলকাতা: ভোটের শুরুতেই ঘাসফুল শিবিরে বড়সড় ধাক্কা৷ পুরুলিয়ার জয়পুরের তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন ঘিরে ফের তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে এবার বড়সড় ধাক্কা খেল তৃণমূল৷ বাতিল হল পুরুলিয়ার জয়পুরের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন৷ নির্বাচন কমিশনের দাবিতে সিলমোহর হাইকোর্টের৷ হাইকোর্টের এই নির্দেশের জেরে এবার আর জয়পুরের আসনে তৃণমূল আর কোনও প্রার্থী দিতে পারবেন না৷
পুরুলিয়ার জয়পুরের তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের বাতিল করার কমিশনার সিদ্ধান্ত খারিজ করে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ৷ তাঁর মনোনয়নপত্রে তারিখ ভুল ছিল৷ সেটা খুব সামান্য ইস্যু৷ তাই পুরোনো মনোনয়ন গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য৷ সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপত রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করল নির্বাচন কমিশন৷ আজ সেই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে নির্বাচন কমিশনের দাবিতেই সিলমোহর দিয়েছে৷ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে খারিজ করে দিয়েছে সিলমোহর হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ৷ ফলে, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার জয়পুর কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়তে পারবেন না ওই তৃণমূল প্রার্থী৷ অর্থাৎ ২৯০টি আসনে এবার সরাসরি লড়বে তৃণমূল৷ কেননা, এর আগে তৃণমূল সুপ্রিমো পাহাড়ে বন্ধুদের জন্য ৩টি আসন ছেড়ে ২৯১ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন৷ জয়পুর কেন্দ্র তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় শুরু থেকেই ১টি আসন হারালো তৃণমূল৷
জানা গিয়েছে, ওই আসনে মনোনয়ন পেশের শেষ দিনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন প্রার্থী। কিন্তু উজ্জ্বল কুমারের হলফনামায় ভুল থাকায় তাকে পরের দিন নতুন করে মনোনয়ন জমা দিতে বলা হয় নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে। তবে পরবর্তী ক্ষেত্রেও তারিখের ভুল থাকায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সমস্যা ছিল, মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন পেরিয়ে যাবার ফলে এখন আর মনোনয়ন পেশ করতে পারতেন না তিনি। তাই এই আসনের প্রার্থী নিয়ে চাপে পড়ে যায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা কলকাতায় শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেন৷ পরে দায়ের হয় হাইকোর্টে মমলা৷
মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন বাতিল করার সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ৷ এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কমিশনের নতুন করে মামলা দায়ের করে নির্বাচন কমিশন৷ সেই মামলার শুনানিতে কমিশনের সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিয়ে হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ৷ ফলে, বাতিল তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন৷
কিছুদিন আগে এই জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশ করেছিলেন। এবার হয়তো তাকে সমর্থন করতে পারে ঘাসফুল শিবির, এমন খবর পাওয়া গিয়েছিল। উল্লেখ্য, দলের তরফে টিকিট না পেয়ে জয়পুরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন দেবজ্যোতি। যদিও এই মনোনয়ন বাতিল নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা করতে পারেননি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার। তিনি জানাচ্ছেন, যারা দায়িত্বে রয়েছেন তারাই স্পষ্টত বলতে পারবেন কি কারণে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তবে পরপর এইভাবে দুবার ভুল হওয়াতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। প্রসঙ্গত, জয়পুর কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী নৃপেন মাহাতো, জনতা দল ইউনাইটেডের কালী শঙ্কর মাহাতো এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বাহাদুর কুশওয়াহা কুইরির মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।