কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলা যেদিন থেকে শুরু হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে একাধিকবার পড়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। আসলে তাদের বিরুদ্ধে পরপর অভিযোগও এসেছে। এবার আরও একবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে তারা। নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে আদালতে। হাইকোর্টের নজরে চলে এসেছে ২০ জন শিক্ষকও।
নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের আতশকাচে ২০ জন শিক্ষক। প্রত্যেককে নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়। আসলে ২০১৬ সালে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ভৌত বিজ্ঞান, বাংলা ,ভূগোল, ইংরেজি, এডুকেশন সহ একাধিক বিষয় শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়। ২০১৮ সালে জুন মাসে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই নিয়োগ নিয়েই একাধিক প্রশ্ন। অভিযোগ উঠেছে, অনেকেই নম্বর কম পেয়ে এবং মেধা তালিকায় নীচে থেকেও চাকরি পেয়েছেন। আর এখনও তাদের চাকরি বহাল আছে। ২০১৬ সালের এসএলএসটি পরীক্ষা নিয়ে চাকরিপ্রার্থী স্বাগতা বিশ্বাস ,বিশ্বজিৎ দেবনাথ, মৌসুমী মণ্ডল সহ ১২ জন এমন অভিযোগ করেছেন আদালতে। তাদের বক্তব্য, যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের প্রাপ্ত নম্বর কম ছিল এবং মেধা তালিকার অনেক নীচে ছিল তারা। তা সত্ত্বেও তারা নিয়োগপত্র নিয়ে এখনও শিক্ষকতার চাকরি করছেন। আর তাদের নম্বর বেশি থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই জায়গাতেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে তাদের মূল অভিযোগ।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”রকেটের গতিতে উত্থান! মুদি দোকান চালানো থেকে অভিষেকের অফিসে চাকরি!” width=”853″>
চাকরিপ্রার্থীরা আদালতে জানিয়েছেন, গোটা বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতর, স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ করা সত্ত্বেও তারা কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাই অবশেষে তারা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দেন যাদের প্রাপ্ত নম্বর বেশি তাদের নিয়োগ করতে হবে। সেই কাজ কমিশন করলেও অন্য একটি বিষয় নিয়ে তারা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে। আসলে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক স্কুল সার্ভিস কমিশন কম নম্বর প্রাপ্ত প্রার্থীদের নিয়োগ বাতিল করে এবং যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগপত্র তুলে দেয়। পাশাপাশি নিজেদের ভুলও স্বীকার করে। কিন্তু জানা গিয়েছে, বাতিল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুনানিতে বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে এ বিষয়ে তাদের অবস্থান হলফনামা আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোমবার এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী বড় অভিযোগ তোলেন আবার। বলেন, একজন ৭০ নম্বর পেয়ে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অথচ একজন ৬৭.৩৩ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় নীচের দিকে থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে শিক্ষাকতার চাকরি করছেন।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় ছ’টি মামলায় যাদের ক্রমতালিকা নীচের দিকে এবং প্রাপ্ত নম্বর মামলাকারীদের থেকেও কম অথচ শিক্ষক হিসেবে কর্মরত তাদের এই মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দেন এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেরকম ২০ জনকে নোটিশ জারি করার নির্দেশ দেন। কী ভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় তারা কম নম্বর পেয়েও চাকরি করছেন সেটা তাদের ৩০ জুনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৮ জুলাই।