কলকাতা: ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গে লড়াই করতে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে রাজ্যের বাইরে ক্ষমতাসীন বহু দল। ইতিমধ্যে রাজ্যে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা। বিহারের আরজেডি’ও বাংলায় লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছে। সেই ধারা বজায় রেখেই এবার রাজ্যে আসার বার্তা দিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন।
এদিন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (JMM) নেতা হেমন্ত সোরেন পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামে জনসভায় যোগ দেন। বৃহত্তর ঝাড়খণ্ড গড়ার লক্ষ্যেই রাজ্যে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের ভোটে প্রার্থী দিতে চলেছেন, জানা গেছে তেমনটাই। কিন্তু হেমন্ত সোরেনের রাজ্যে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টাকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে জেএমএম সভাপতির কার্যক্রমে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন তিনি। স্পষ্ট বলেছেন, ‘এটা অন্যায়।’
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে হেমন্ত সোরেনের দল প্রার্থী দিলে তাঁর পাল্টাও দেবে তৃণমূল কংগ্রেস, জানিয়েছেন মমতা। ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনেও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী দিয়ে সেখানকার বাংলা ভাষীদের ভোটে ভাগ বসাবেন, হুমকি দিয়েছেন তিনি। এদিন পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামে জামদা সার্কাস ময়দানে সভা করেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। সেখান থেকে তিনি কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, ঝাড়খণ্ড ও ছত্তিসগড়কে পৃথক করে দিয়ে আদতে ওই এলাকার আদিবাসীদেরকেই ঠকিয়েছে কেন্দ্র। সেই সঙ্গে জানান পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর সহ একাধিক অঞ্চল মিলিয়ে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫% আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। ঝাড়গ্রামের সভাকেই নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রচারের সূচনা বলেই জানিয়েছেন তিনি।
এদিন হেমন্ত সোরেনের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা বলেন, “আমি তাঁর দলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলাম। আর আজ তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাংলায় এসেছেন! এটা অন্যায়।” এরপরই ঝাড়খণ্ডের বাঙালিদের ভোট বাক্সে ভাগ বসানোর ইঙ্গিত দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর কথায়, “ঝাড়খণ্ডেও অনেক বাঙালি থাকে। আমরাও কি সেখানে ভোট লড়তে যাব? তাই করা উচিত।” সব মিলিয়ে হেমন্ত সোরেনের বাংলায় আগমন বার্তা রাজ্যের ভোট সমীকরণকেই যে আরো জটিল করে তুলল, তা বলাই বাহুল্য।