কলকাতা: জেলার হাসপাতাল থেকে রেফার রুখতে বড় পদক্ষেপ করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জেলা হাসপাতালে যে পরিষেবা নেই একমাত্র তার জন্য রেফার করা যেতে পারে। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে রেফার করা যাবে না। জেলা হাসপাতালে কোন পরিষেবা বাধ্যতামূলক সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়। একই সঙ্গে যে পরিষেবা নেই তার জন্য ডিজায়ারেবল তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। সুতরাং, জেলা হাসপাতালে যে পরিষেবা থাকবে না, শুধুমাত্র সেই রোগের জন্য রোগীকে কলকাতায় রেফার করা যাবে।
আরও পড়ুন: উজবেকিস্তানে শিশু মৃত্যুর জের, ভারতীয় ওষুধ সংস্থার উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায় অর্থোপেডিক, অপথ্যালমোলজি, গাইনোকোলজি, পেডিয়াট্রিক-সহ সমস্ত বিভাগের ৩৭০টি পরিষেবার তালিকা দেওয়া হয়েছে এসেনশিয়াল ক্যাটেগরিতে। যে ডিজায়ারেবল তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে রয়েছে ৬৭ টি পরিষেবা। স্বাস্থ্য দফতর স্পষ্ট জানিয়েছে, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার পরিকাঠামো না থাকলে, উন্নততর পরিকাঠামো সম্পন্ন জেলার মেডিক্যাল কলেজ বা কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীকে রেফার করা যেতে পারে। রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছে, এই নির্দেশ মূলত দেওয়া হয়েছে রোগীদের হয়রানি কমাতে। কারণ বারবার এই ‘রেফার রোগ’ নিয়ে অভিযোগ উঠে আসছিল বিভিন্ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
যদিও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিমত আছে খোদ চিকিৎসক মহলেই। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, এইভাবে চিকিৎসা বেঁধে রাখা যায় না। কোনও হাসপাতালে কোনও চিকিৎসাকে বাধ্যতামূলক করা যায় না। তার জন্য পর্যাপ্ত লোক, সরঞ্জাম, পরিকাঠামো প্রয়োজন। এতে মুশকিল আরও বাড়বে ভবিষ্যতে। গত নভেম্বর মাসেই রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী রেফারের ‘রোগ’ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা স্তরে পরিকাঠামো বৃদ্ধির পরেও কেন রেফারের প্রবণতা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সেই প্রেক্ষিতে কড়া বার্তা দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, রেফার করা চিকিৎসায় গাফিলতির অপরাধ বলেই বিবেচিত হবে। মুখ্যমন্ত্রী তখন জানিয়েছিলেন, রেফারের জন্য রাজ্যে বাড়ছে প্রসূতু মৃত্যুর ঘটনাও৷ তাই কোন কোন কেসে রেফার হয়েছে এবং গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু হয়েছে, তা দেখে নিতে হবে, এমনই নির্দেশ ছিল।