কলকাতা : ওপার থেকে কোনও পায়রা উড়ে এলেই চোখ পাকিয়ে দেখেন এপারের রক্ষীরা। তারা জানেনই না, এদের অনেকেই ভারতীয় কবুতরগুলির বংশধর। হয়তো তাদেরই কেউ কেউ খুঁজতে আসে তাদের মূল।পাকিস্তানে যেসব কবুতর পালন করা হয়, তাদের বেশিরভাগই নানা ভারতীয় বংশের, লাহোরের কবুতরবাজ মহম্মদ রেহান জানাচ্ছেন। তিনি কম করেও ২৫ রকমের পায়রা পোষেন। তাঁর কাছে আছে রামপুরী, সাহারানপুরী, ফিরোজপুরী কবুতর। সঙ্গে আছে পাকিস্তানি নানা জাতের কবুতরও। তাদের নাম হাইফ্লায়ার, গোল্ডেন, টেড্ডি, লক্কা।
তাদের সঙ্গে মিলনে আরও বেগবান, শক্তিশালী কবুতর বানান তিনি। এদের কেউ কেউ একটানা ১৮ ঘণ্টা উড়তে পারে।পায়রা পোষা বেশ খরচসাপেক্ষ। তবু বহু কবুতরবাজ এক একটা পায়রার লাখ লাখ টাকা ওড়াতে পিছপা নন। রেহান জানান, একটা পায়রার দাম এক লাখ টাকা। তাদের খাবারের পিছনে খরচ হয় ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। কোন জাতের, কেমন দেখতে তার উপরই নির্ভর করে পায়রার দাম।প্রথমে দেখা হয় পায়রার চোখ। তার রঙ দেখেই বোঝা যায় তাদের বুদ্ধি কেমন। তারপর দেখা হয় পায়ের পাতা। তাতে বোঝা যায় তাদের শক্তি কতটা। ডানার মাপ ছাড়াও গোনা হয় পালক। তাতে আন্দাজ হয় তারা কতটা উড়তে সক্ষম। দেখা হয় লেজও। তাতে মালুম হয় কতটা ভেসে থাকতে পারবে সেটি।
তবে সবথেকে কদর সেই পায়রার, যার মাথাটা বড়। ভারতীয় ও পাকিস্তানি পায়রার মিলনে যেসব পায়রার জন্ম, তারা অনেক পোক্ত বলে ই মনে করেন লাহোরের সবাই। এই পায়রারা ভারতীয় পায়রাদের হেলায় হারাতে পারে।লাহোরে এখনও হয় কবুতরবাজি। ভোর পাঁচটায় উড়িয়ে দেওয়া হয় পায়রাকে। বিকেলে ফিরে আসে তারা। যে সবথেকে দেরিতে পেরে সেই হয় বিজয়ী। গরমকালে এই প্রতিযোগিতা হলেও সারাবছর ধরেই চলে পায়রাদের প্রশিক্ষণ। নানরকম ড্রাই ফ্রুট দিয়ে যত্ন করে বানানো হয় পায়রাদের খাবার।আবার লড়াইয়ে জিততে মরিয়া কিছু কবুতরের মালিক আবার পায়রাদের খাবারে মেশান পৌরুষবৃদ্ধির ওষুধও।