কলকাতা: এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করা এবং পরিবারকে ভয় দেখানোর অভিযোগের মামলায় পুলিশের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তিনি এতটাই অসন্তুষ্ট হয়েছেন যে এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতে বিচারপতির বক্তব্য, রাজ্যের উচিত এক নির্যাতিতার পাশে থাকা। কিন্তু রাজ্য পুলিশ তৃতীয় কোনও ব্যক্তির পাশে থাকছে। এটা হতে পারে না। তাই ঘটনার তদন্ত তিনি সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছেন। আগামীকালের মধ্যে ধর্ষণ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি উলুবেড়িয়া থানা সিআইডিকে দেবে। না হলে আদালত পদক্ষেপ করবে।
সরকারি জায়গায় চায়ের দোকান থাকায় পরিবারকে ভয় দেখিয়ে তা সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। এমনকি নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও আদালতে অভিযোগ করেছেন আবেদনকারী। তিনি এও জানান, পুলিশ অভিযোগ না নেওয়ায় তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আরও বড় বিষয় হল, সামাজিক চাপে পড়ে মামলাকারীর স্বামী আত্মহত্যা করেন কিন্তু দুষ্কৃতীরা এখনও এলাকায় ঘুরছে। এই কথা শুনেই ক্ষুব্ধ হন হাইকোর্টের বিচারপতি। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের লজ্জা এটা। এই মামলায় রাজ্য জানিয়েছেন, ঘটনায় তিনজন গ্রেফতার হয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যায়নি এখনও। তবে মামলাকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলেও জানান তিনি।
আদালতে জানানো হয়েছে, সরকারের জায়গায় থাকা দোকান বিক্রি করে দিয়েছেন মামলাকারী। আর নির্যাতিতার মা মেনেছেন তিনি বিক্রি করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষ গণস্বাক্ষর জমা দিয়েছেন পুলিশের কাছে। এতেই বিচারপতির পাল্টা প্রশ্ন, সরকারি জায়গা বিক্রি করেছে তিনি মানছেন, তাহলে কি তাদের পরিবারকে ধর্ষণের অধিকার জন্মে যায়? কতবার তল্লাশি হয়েছে, মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের কী চেষ্টা হয়েছে তা জানতে চান বিচারপতি। তাই কেস ডাইরিও দেখতে চেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে জানতে চেয়েছেন, মূল অভিযুক্ত প্রভাবশালী বা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কিনা। এদিন মামলার শুনানিতে উলুবেড়িয়া থানার আইসি রামেশ্বর ওঝা ও আইও হাজির ছিলেন। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্বশস্ত্র পুলিশ দিয়ে নির্যাতিতার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে হবে।