ব্যক্তিগত গাড়িতে পুলিশের স্টিকার, অফিসারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা খারিজ হাইকোর্টের
কলকাতা: এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছিল কিছুদিন আগে। সেই মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মামলাকারীর দাবি অনুযায়ী, ওই পুলিশ অফিসার তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে পুলিশের স্টিকার ব্যবহার করেছেন। যা তিনি করতে পারেন না। ব্যক্তিগত গাড়িটিকে সরকারি গাড়ি হিসাবে দেখিয়ে অবৈধভাবে পার্ক করার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনও পুলিশ কর্মী তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে পুলিশের স্টিকার ব্যবহার করতেই পারেন।
ঘটনা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের। সোনারপুর থানার ওসি সঞ্জীব চক্রবর্তী তাঁর সার্ভে পার্কের বাড়ির কাছে ব্যক্তিগত গাড়ি পার্ক করেছিলেন। মামলাকারী আরটিআই করে জানতে পারেন, ওই গাড়িটি পুলিশ বিভাগের অন্তর্গত নয়। সেটি একটি ব্যক্তিগত গাড়ি। অভিযোগ, ওসি তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িটিকে সরকারি গাড়ি হিসাবে দেখিয়ে অবৈধভাবে পার্ক করার চেষ্টা করে একটি ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। এরপর তিনি আলিপুর আদালতে এনিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ করেন, পুলিশ কর্মী সাধারণ জনগণের পাশাপাশি সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বেআইনি সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িটিকে পুলিশ বিভাগের গাড়ি হিসাবে দেখিয়েছেন। এটি একটি অপরাধ।
একই সঙ্গে তিনি ওই ওসির বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা শুরু করার জন্য আলিপুর আদালতে আবেদন জানান। তার ভিত্তিতে আদালত ফৌজদারি মামলা শুরু করে এবং ওই অফিসারকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ওসি। হাইকোর্টে মামলাকারী জানান, সার্ভে পার্ক থানা এলাকায় নো-পার্কিং লঙ্ঘনের জন্য পুলিশ অফিসারকে ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
মামলার শুনানিতে এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি জানান, কোনও পুলিশ কর্মী তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে পুলিশের স্টিকার লাগাতে পারেন। ব্যক্তিগত গাড়িতে সরকারি পদমর্যাদা প্রকাশ করা একটি সমস্যা হলেও তা অপরাধ নয়। আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র পুলিশকর্মীই নয়, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের আধিকারিকরা, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, জনগণের প্রতিনিধি অর্থাত্ বিধানসভার সদস্য ও সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাঁদের ব্যক্তিগত গাড়িতে তাদের পদবি এবং নাম ব্যবহার করতে পারেন।