অসম: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট করে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র৷ এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট করে গ্রেপ্তার হলেন বাংলার আরও এক অধ্যাপক৷ অসমের শিলচর থেকে গ্রেপ্তার প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তনী৷ শিলচরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার অতিথি অধ্যাপক সৌরদীপ সেনগুপ্ত৷ বাড়িতে ঢুকে অধ্যাপকের মাকে শাসিয়ে যাওয়ার অভিযোগ৷
দিল্লির হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ফেসবুকে পোস্ট করেন ওই অধ্যাপক৷ প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ফেসবুকে পোস্ট করার অপরাধে অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ অসম পুলিশের বিরুদ্ধে৷ অসমের শিলচরের বাড়ি থেকে কলেজ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ দেওয়া হয়েছে ৪টি ধারায় মামলা৷
অভিযোগ গত দু’তিন দিন আগে দিল্লিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে একটি পোস্ট করেন ওই অধ্যাপক৷ পোস্টের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি তাঁর অবস্থান তুলে ধরেন৷ প্রধানমন্ত্রীকে ‘গণহত্যাকারী’ হিসেবে বলেও আখ্যা দেন তিনি৷ অধ্যাপকের ওই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় গুরুচরণ কলেজ ও সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ এই পোস্ট ভাইরাল হতেই গুরুচরণ কলেজের পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি৷ বিতর্কিত পোস্ট মুছে দেন৷
কিন্তু তাতে পরিস্থিতি দমেনি৷ অভিযোগ, গতকাল রাতে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় ৫০-৬০ জনের একটি দুষ্কৃতী দল৷ বাড়িতে ঢুকে অধ্যাপকের মাকে শাসানো হয়৷ দেওয়া হয় খুনের হুমকি৷ ফেসবুক লাইভে অবিলম্বে অধ্যাপককে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবিও তোলা হয়৷ এরপরে এবিভিপি কয়েকজন সমর্থক অধ্যাপকের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করে৷ গেরুয়া শিবিরের ছাত্রসংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে তড়িঘড়ি মাঠে নামে পুলিশ৷ অধ্যাপকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়৷
অধ্যাপকের বন্ধুদের তরফ ইতিমধ্যেই দাবি তুলতে শুরু করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে নিজের অবস্থান তুলে ধরার জন্য যদি অধ্যাপককে গ্রেপ্তার হতে হয়, তাহলে দুর্ভাগ্যজনক হলেও দেশে বাকস্বাধীন কোথায়? ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অধ্যাপকের হয়ে জোর প্রচার শুরু হয়েছে৷ পরিবারের তরফে অধ্যাপকের জামিনের বিষয়েও তৎপরতা শুরু করা হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, বছর দুই আগে শিলচরে গুরুচরণ শীল কলেজের অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের এই প্রাক্তনী সৌরদীপ সেনগুপ্ত৷ ২০১৪-১৫ বর্ষে তিনি ছিলেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সহকারী সম্পাদক৷