কলকাতা: নভেল করোনা ভাইরাস নামের মহামারীকে পর্যুদস্ত করতে গৃহবন্দি গোটা দেশ। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রবীণ ও অশক্তদের জন্য এই ভাইরাস সব থেকে বেশি প্রাণঘাতী। তাই করোনা সংক্রমণের হাত থেকে প্রবীণদের সুরক্ষায় এবার সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রত্যেকটি রাজ্যকে ওই গাইডলাইন মেনে চলতে বলা হয়েছে।
এদেশে এখনো পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে বয়স্কদের সংক্যা তুলনামূলক কম হলেও, মৃত্যু হারে তারাই এগিয়ে আছেন।সমীক্ষায় প্রকাশ, ভারতে করোনা আক্রান্তে মৃতদের ৬০ শতাংশই ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ নাগরিক। বিশেষ করে যে প্রবীণদের হাঁপানি, ডায়াবিটিস বা হার্টের অসুখ রয়েছে, তাদের করোনা সংক্রমণ প্রাণঘাতী হওয়ার সর্বাধিক আশঙ্কা থাকে । মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এরপরই ভারতের সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ক্ষমতায়ন মন্ত্রক কোভিড-১৯ থেকে প্রবীনদের সুরক্ষার জন্য রাজ্যগুলিকে এক নির্দেশিকা পাঠিয়েছে।প্রত্যেক রাজ্যের মুখ্যসচিবকে, এই উপদেষ্টায় সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের সচিব আর. সুব্রমনিয়ম প্রবীণ নাগরিক এবং তাদের তত্ত্বাবধানে নিযুক্তদের 'কী করা উচিত’ এবং ‘কী উচিত নয়’ সেই সম্পর্কে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন। এতে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ নাগরিকদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং দিল্লির এইমস -এর সহযোগিতায় এই গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে।
ওই গাইডলাইনের মূল কথা হল করোনা ভাইরাসজনিত উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, এমন ব্যক্তির থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাঁদের পার্ক, বাজার এবং ধর্মীয় স্হানগুলির মতো জনবহুল যায়গা একেবারে এড়িয়ে চলার পরামর্স দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শরীরের বিশেষ যত্ন নেওয়া, দিনভর পর্যায়ক্রমে হাত ধোয়া, চশমা এবং অন্যান্য দৈনন্দিন জিনিসপত্র পরিস্কার রাকা, কাশি বা হাঁচির সময় টিস্যু বা রুমাল ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। রুটিন চেকআপ বা ফলোআপের কন্য হাসপাতালে না যাওয়ার পরমর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রয়োজনে ডাক্তার বা স্বাস্হ্যকর্মীদের সঙ্গে টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে যোগাযোগের কথা বলা হয়েছে। আত্মীয় বা বন্ধুদের বাড়িতে আমন্ত্রণ না জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মানসিকভাবে সুস্হ থাকার জন্য বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলা হয়েছে, তবে তা অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব মেনে। যোগাসন বা হালকা অনুশীলনেরও পরার্মশ দেওয়া হয়েছে, যদি এটিতে চিকিৎসকদের থেকে কোনও বাধা না থাকে তবেই। আর একাকীত্ব বা একঘেয়ামী কাটাতে চিত্রকলা, সংগীত এবং পড়াশুনোর মতো পুরানো শখ ফেরানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।