Aajbikel

জিপিএস, মোবাইল চার্জ দেওয়া ব্যবস্থা জুতোর মধ্যে সব! ‘স্মার্ট’ আবিষ্কার সৌভিকের

 | 
souvik

ঘড়ি হোক বা মোবাইল, সব কিছুর সঙ্গেই আজকাল জুড়ে গিয়েছে ‘স্মার্ট’ তকমা। তাহলে জুতোই বা বাদ যায় কেন? ‘স্মার্ট’ জুতো বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে হুগলীর সৌভিক শেঠ।

ভূতের রাজার দেওয়া জুতোর কথা মনে আছে? যা পায়ে গলালে নিমেষেই পৌঁছে যাওয়া যেত ইচ্ছে মতো জায়গায়... তেমনই সৌভিকের বানানো জুতোরও কিছু গুণাবলী রয়েছে। এই জুতো পায়ে গলালেই ঘটবে ম্যাজিক! মোবাইল চার্জের ব্যবস্থা, জিপিএস ট্র্যাকার, ক্যামেরা, জুতোর মধ্যে কী নেই! মজার কথা হল এই জুতো পরে হাঁটার সময় পায়ের চাপে বিদ্যুৎ তৈরি হয়। সেই বিদ্যুৎ দিয়েই চার্জ করা যাবে মোবাইল।

আশ্চর্য এই জুতোর নাম ‘স্মার্ট সু”। এতো গেল জুতোর কাহিনী, এবার বরং জানা যাক আবিষ্কারক সম্পর্কে।   

চন্দননগরের কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের নবম শ্রেণির ছাত্র সৌভিক শেঠ। বাবা জুটমিলের শ্রমিক। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। ১৫ ছুঁইছুঁই সেই ছেলের হাতেই তৈরি হয়েছে এই আশ্চর্য জুতো। যা চমকে দিয়েছে গোটা জেলা তথা বাংলাকে।

আধো-অন্ধকার মেশানো এই ঘরেই ভিড় করে চিন্তা-ভাবনারা। সেখানে বসেই আপন কাজে মগ্ন থাকে এই তরুণ উদ্ভাবক! এটাই তাঁর সব পেয়েছির দেশ।

পড়াশোনার পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বিভিন্ন প্রজেক্ট তৈরির কাজ বরাবরই আকর্ষণ করে শৌভিককে। সেই নেশার বশেই মাঝে মধ্যে এক্সপেরিমেন্ট করে সৌভিক। ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে কলিংবেল, বর্জ্য পদার্থ জ্বালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো প্রজেক্ট নিয়ে এর আগে কাজ করেছে সে। এখন তাঁর উদ্ভাবন তালিকায় নতুন সংযোজন স্মার্ট শু-আবিষ্কার।

সৌভিকের কথায়, এই বিশেষ জুতো পায়ে এক কিলোমিটার হাঁটলেই ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ হয়ে যাবে। আর সেখান থেকে মোবাইল বা অন্যান্য ইলেকট্রিকাল গ্যাজেট অনায়াসেই চার্জ করা যাবে। জুতোয় লুকনো ক্যামেরা গোপনে রেকর্ড করতেও সক্ষম।

জুতো আবিষ্কারের জন্য ইতিমধ্যেই বিদেশ থেকে ডাকও পেয়েছে সৌভিক। জাপানের এক প্রযুক্তি সংস্থা শুনতে চেয়েছে তার উদ্ভাবনের কথা। কিন্তু, আর্থিক সংকটের কারণে সেখানে যাওয়া প্রায় অসম্ভব তাঁর কাছে। ভবিষ্যতে আইআইটিতে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে সৌভিকের। কিন্তু, অনটনের সংসারে সেই ইচ্ছেটা এখন বিশ বাঁও জলে।

বাবা-মায়ের আশা, কোনও জুতোর কোম্পানি বা সংস্থা যদি ছেলের পাশে দাঁড়ায় তাহলে হয়তো এই ‘স্মার্ট শু’ আগামিতে বড় সাফল্য আনবে। 

কিন্তু,  মানুষের কাছে এই কাজ পৌঁছে দিতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে সৌভিককে। সেই সাধ্য এই মুহূর্তে তার নেই... সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে চন্দননগরের এই এঁদো ঘরে কবে এসে পৌঁছবে সাফল্যের আলো... এখন সেই অপেক্ষায় দিন গুনছে শেঠ পরিবার।

Around The Web

Trending News

You May like