নন্দীগ্রাম: বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে হিংসার ছবি ধরা পড়েছিল এবং বিজেপি দাবি করছিল যে জায়গায় জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী এবং সর্মথকরা বিজেপির কর্মীদের ব্যাপক মারধর করেছে। এর পাশাপাশি দাবি করা হচ্ছিল যে একাধিক বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকরা রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে এবং বহু সংখ্যক কর্মীদের খুন করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে ভোট-পরবর্তী হিংসার চিত্র দেখতে কোচবিহার সফর করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেই সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তুঙ্গে কারণ সেখানে গিয়ে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তিনি। এবার নন্দীগ্রাম সফরে গিয়ে যেন আগুনে ঘি ঢাললেন! সেখানে পৌঁছে রাজ্যপালের বক্তব্য, হিংসার আগ্নেয়গিরির ওপর বসে রয়েছে রাজ্য। চারিদিকে চলছে খুন, ধর্ষণ এবং লুটপাট।
কোচবিহার সফরে যখন রাজ্যপাল গিয়েছিলেন তখন তার সঙ্গে ছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামানিক। বিজেপি সাংসদকে নিয়ে কোচবিহার সফল করায় রাজ্যপালকে চরম আক্রমণ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। দাবি করা হয়েছিল, নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সফর করতে পারেন না রাজ্যপাল। এই প্রেক্ষিতে তাঁকে অযোগ্য বলে আক্রমণ করে তাঁর পদত্যাগ চেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। পরবর্তী ক্ষেত্রে যখন জানা যায় তিনি নন্দীগ্রাম সফরে যাচ্ছেন তখন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন রাজ্যপালের সঙ্গে কোন দলের লোক থাকবে না। যদিও আজ নন্দীগ্রামে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা গেল খোদ শুভেন্দু অধিকারীকেই। এদিন সকালে নন্দীগ্রাম পৌঁছে রাজ্যপাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, একদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এবং অন্যদিকে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে চলছে রাজ্য। চারিদিকে ধর্ষণ এবং খুন হচ্ছে, লুটপাট করা হচ্ছে। রাজ্যপালের কথায়, জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে রাজ্য! পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা যে খুব সঙ্কটজনক তা আজ ফের একবার দাবি করেন তিনি। সব মিলিয়ে কোচবিহারে সফরের পর এদিন নন্দীগ্রামে গিয়েও ফের একবার বিতর্কিত মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
এদিকে আবার তৃণমূল কংগ্রেস তারকা সদস্য সায়নী ঘোষ রাজ্যপালকে আক্রমণ করে বলেছেন, “একজন চেষ্টা করেছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হওয়ার কিন্তু চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। এখন বিজেপির হাতের পুতুলরা বাংলায় গান্ধী হওয়ার চেষ্টা করছে। যখন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বে নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি করে বাংলার সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছিল তখন আপনার এমন কিছু মনে হয়নি?” রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্নই করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা সদস্য সায়নী ঘোষ।