‘অপরাধীদের সঙ্গে সরাসরি যোগ’! রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার দাবি কল্যাণের!

‘অপরাধীদের সঙ্গে সরাসরি যোগ’! রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার দাবি কল্যাণের!

কলকাতা: রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সংঘাত নতুন নয়৷ সেই সংঘাতে নতুন করে ঘৃতাহুতি দিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অপরাধীদের সঙ্গে রাজ্যপালের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে বলে সুর চড়ালেন তিনি৷ তাঁর কথায়, অপরাধীদের সঙ্গে যোগ রয়েছে বলেই তাদের গ্রেফতার করার প্রতিবাদে টুইট করছেন তিনি৷ শুধু তাই নয় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার দাবিও তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ৷ 

আরও পড়ুন- হেলমেট না পরলে হবে না স্টার্ট, আছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট-জিপিএস! অভিনব বাইক আবিষ্কার শিক্ষকের

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দুর্নীতির ও পাচার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গোবিন্দ আগরওয়াল এবং সুদীপ্ত রায় চৌধুরীর মতো অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করছেন রাজ্যপাল৷ গোবিন্দ আগরওয়াল এবং নীরজ সিং নামে এক আইআরএস অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ইডি৷ এই নিরজ সিং বিজেপি’র এক নেতার আত্মীয় বলেও জানান তিনি৷ কল্যাণবাবু জানান, পিএমএলএ আইনে অভিযুক্তদের ৩.৮৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বজেয়াপ্ত করে ইডি৷ এর পর কলকাতা পুলিশ ইডি’র কাছ থেকে তদন্তের সেই কাগজপত্র সংগ্রহ করে এবং তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যায়৷ তদন্তের পর ২১ নভেম্বর গোবিন্দ আগরওয়ালকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ৷ অন্যান্য অনেক চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের নামও তদন্তে উঠে আসে৷ এক সিনিয়র আইআরএস অফিসারকে এই তদন্তে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল৷ তাঁর কথায়, কলকাতা পুলিশ অত্যন্ত ভালো কাজ করছে৷ অথচ এই দুর্নীতি পর্দা ফাঁস করার পর রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় প্রতারকদের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করলেন৷ তিনি এই তদন্তে বাধা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন কল্যাণবাবু৷ 

কল্যাণ আরও দাবি করেন, এই তদন্ত চলাকালীন  সিবিআই-এর কাছ সুদীপ্ত রায় চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কিছু তথ্য কলকাতা পুলিশের হাতে আসে৷  তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়৷ এর আগে ইডি বিধাননগর থানায় সুদীপ্ত রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল বলেও দাবি করেন তিনি৷ শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, ইডির তদন্তে জানা যায় রোজভ্যালির এক কর্মীর থেকে ২ কোটি টাকা নিয়েছিলেন সুদীপ্ত রায় চৌধুরীর৷ কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি-র তদন্তের উপর ভিত্তি করে কলকাতা পুলিশ কাজ করছে৷ কিন্তু রাজ্যপাল কলকাতা পুলিশকেই আক্রমণ করছে বলে অভিযোগ তাঁর৷ এই সুদীপ্ত রায় চৌধুরী মানুষ ও গরু পাচার এবং তোলাবাজির এক গভীর চক্রের সঙ্গে জড়িত৷

 
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, রোজভ্যালি ছাড়াও আরও দুটি মামলায় সুদীপ্তর নাম জড়িয়েছি৷ মামলা হয়েছে পিএমএলএ আইনে৷ এই সুদীপ্ত রায় চৌধুরী ইডি-র ভুয়ো তথ্য দেখিয়ে টাকা তুলত বলেও অভিযোগ করেছেন কল্যাণবাবু৷ তাঁর অভিযোগ, গোবিন্দ আগরওয়াল এবং সুদীপ্ত রায় চৌধুরীর উভয়েই প্রতারক৷ তাঁদের গ্রেফতারের বিরোধিতা করে ২২ এবং ২৫ নভেম্বর দু’টি ট্যুইট করেছেন রাজ্যপাল৷ কেন তিনি এই অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করছেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল সাংসদ৷ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি’র সমস্ত অপরাধীদের সঙ্গে যোগ রয়েছে তাঁর৷ ইডি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে বাধা দিচ্ছেন রাজ্যপাল৷

আরও পড়ুন- ‘চাল চোর সরকার, আর নেই দরকার’! ফের বিস্ফোরক লকেট

তিনি বলেন, রাজ্যপালের সঙ্গে বিজেপি-র এবং পশ্চিমবঙ্গের অনেক অপরাধীর সরাসরি যোগাযোগ আছে৷ উনি বার বার মুখ্যমন্ত্রীকে টার্গেট করছেন৷ অথচ উনি প্রধান  অভিযুক্তদের সাহায্য করার চেষ্টা করছেন৷ তদন্তে বাধা দেওয়ার এবং প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন৷’ তিনি আরও দাবি করেন, যাঁরা তদন্তকে প্ররোচিত করার চেষ্টা করেন তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ এবং ১৮৯ ধারায় মামলা করা হয়৷ রাজ্যপাল কলকাতা পুলিশের কাজে, রাজ্য    সরকারের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন৷ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চালু করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই প্রেক্ষিতে রাজ্যাপালকে ভারতীয় আইন পড়ার পরামর্শও দেন তিনি। কল্যাণবাবু বলেন, আগে ১৬৩ ধারা ভালো করে পড়ুন রাজ্যপাল।’ 

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি রাজ্যপাল৷ তৃণমূল সাংসদের অভিযোগের সত্যাতা যাচাই করেনি আজ বিকেল ডট কম৷ তৃণমূল সাংসদের সাংবাদিক বৈঠকে তোলা দাবির ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন৷
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *