কলকাতা: করোনা মোকাবিলায় কোষাগারে টান পড়ছে বহু রাজ্যের। জনসাধারণের জন্য তহবিল গঠন করেও সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না অনেক ক্ষেত্রেই। তাই ইতিমধ্যেই দেশের দুই রাজ্যে তেলেঙ্গানা ও মহারাষ্ট্রে সরকারি কর্মচারীদের বেতন কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরাজ্যে সরকারিভাবে তেমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হলেও, স্বেচ্ছায় বেতনের একাংশ সরকারের জরুরি ত্রাণ তহবিলে প্রদান করার আবেদন জানিয় মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালো তৃণমূল শিক্ষা সেল।
সরকারি অন্যান্য কর্মীদেরকেও এই পরিকল্পনার আওতায় আনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। গত ৩ এপ্রিল এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে এই চিঠি পাঠায় তাঁরা। সেখানে শিক্ষক,অধ্যাপক সহ অন্যান্য রাজ্যসরকারি সমস্ত কর্মীদের মাসিক বেতনের পরিমাণ সাপেক্ষে ন্যূনতম হারে একমাসের বেতনের আংশিক কেটে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
এক্ষেত্রে মাসিক বেতনের পরিমাণ সাপেক্ষে ন্যূনতম যে হারে বেতন কাটার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা হল-
১) ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতনভুক্ত বা সাম্মানিক প্রাপ্ত কর্মচারীদের বেতন কাটা যাবে না।
২) ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতনভুক্ত কর্মচারীদের মাত্র ৫% বেতন কাটা হোক।
৩) ৫০,০০০ থেকে ৭৫,০০০টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতনভুক্ত কর্মচারীদের মাত্র ১০% বেতন কাটা হোক।
৪) ৭৫,০০০ থেকে ১,০০,,০০০টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতনভুক্ত কর্মচারীদের মাত্র ২০% বেতন কাটা হোক।
৫) এক লাখ টাকার বেশি মাসিক বেতনভুক্ত কর্মচারীদের ৩০% বেতন কাটা হোক।
অন্যদিকে ১৫০০০ টাকা বা তার চেয়ে কম বেতনভুক্ত সরকারি চুক্তি ভিত্তিক কর্মীদেরও এই পরিকল্পনার আওতার বাইরে রাখার আবেদন জানানো হয়েছে তৃণমূল শিক্ষা সেলের পক্ষ থেকে। যেমন- প্যারা টিচার, স্পেশাল এডুকেটরস, আইসিটি কম্পিউটার টিচার, শিক্ষাবন্ধু (বিএলআরসি, ইউএলআরসি, সিএলআরসি, সিআরসি) যারা এসএসএ- র অধীনে আর্থিক সহযোগিতাপ্রাপ্ত ইত্যাদি।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষা সেলের আহ্বায়ক জয়দেব গিরি আজ বিকেল ডট কমকে জানিয়েছেন, ‘‘যাঁরা মোটা বেতন পান, এই দুর্দিনে দাঁড়িয়ে তাঁরা যদি সরকারের পাশে এসে না দাঁড়ায়, তাহলে সরকার কীভাবে লড়াই করবে৷ সরকার তো জনগণের প্রতিষ্ঠান৷ যদি এই মুহূর্তে আমরা অমানবিক হয়, তাহলে গরিবরা কী করবেন? যারা রিক্সা টানছেন, তাঁদের সংসার কী করে চলবে? আজ সরকার চাল ডাল আলু দিচ্ছে৷ এই সমস্ত করতে গেলেও তো খরচ হচ্ছে৷ আমরা সাহায্য না করলে সরকার টাকা পাবে কোথা থেকে? আমরা যদি মানবিক না হয় তাহলে, আমার সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা কোথায়? আমি সবার কাছে আবেদন জানায়, যাঁদের উচ্চ বেতন, তারা এই সংকট সময়ে এগিয়ে আসুন৷ তাঁদের যতটুকু সামর্থ্য, সেই অনুযায়ী রাজ্যের তহবিলে দান করুন৷’’